পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার শরৎনগর স্টেশনে ট্রেনের যাত্রী ও গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে কয়েকজন আহতের খবর পাওয়া গেছে। ট্রেন ছাড়তে দেরি করায় তর্কের জেরে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।
রেলওয়ে ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার ভোরে পার্শ্ববর্তী ভাঙ্গুড়া স্টেশনে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়ে রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মেরামত কাজ চলায় সোমবার রাতে শরৎনগর স্টেশনে একতা এক্সপ্রেস থামানো হয়। কিন্তু ট্রেন ছাড়তে দেরি হওয়ায় যাত্রীরা হঠাৎ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। প্রথমে তারা স্টেশন মাস্টারকে মারধরের চেষ্টা চালান। এরপর আরও যাত্রী ট্রেন থেকে নেমে স্টেশনে হইচই করতে থাকলে স্থানীয়রা তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। এতে ক্ষিপ্ত যাত্রীরা স্থানীয়দের ওপর হামলা চালান। নজরুল ইসলাম নামে এক স্থানীয় মসজিদে আশ্রয় নিলে সেখানেও হামলা চালান যাত্রীরা।
এ ঘটনায় কামরুল হাসান রিফাত ও আকাশ নামে স্থানীয় দুই যুবক আহত হন। ট্রেনযাত্রী কয়েকজন আহত হয়েছে। তবে তাদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।
পরে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিলে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে গ্রামবাসী। তারা জড়ো হয়ে যাত্রীদের প্রতিরোধ করেন। ট্রেনে উঠেও কয়েকজন যাত্রীকে মারধর করে স্থানীয় কিছু যুবক। সর্বশেষ পিছু হটে যাত্রীরা। খবর পেয়ে ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং ট্রেনটিকে স্টেশন থেকে এক কিলোমিটার দূরে সরিয়ে নেয়।
এ বিষয়ে শরৎনগর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. তাওহিদ হোসেন বলেন, ভাঙ্গুড়া স্টেশনের কাছে রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় মেরামত কাজ চলছিল। যে কারণে একতা এক্সপ্রেস ট্রেনটি সোমবার রাত ৮টা ৩২ মিনিটে শরৎনগর স্টেশনে আসার পর দাঁড় করানো হয়। ট্রেন ছাড়তে দেরি হওয়ায় রাত পৌনে ১০টার দিকে কয়েকজন যাত্রী এসে আমার সঙ্গে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। এ সময় যাত্রীদের মধ্যেই দুই গ্রুপ হয়ে যায়। তাদের মধ্যে বেশি ক্ষুব্ধ গ্রুপটি আমার কক্ষের একটি চেয়ার ভাঙচুর করে। এলাকাবাসী এগিয়ে আসার পর তারা চলে যায়। তখন ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ ট্রেনের জানালা ভাঙচুর করে। পুলিশ আসার পর পরিস্থিতি শান্ত হয়। রাত ১০টা ১০ মিনিটে ট্রেনটি ছেড়ে যায় বলে জানান তিনি।
ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। পরে ট্রেনটিকে নির্দিষ্ট গন্তব্যে ছেড়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। যাত্রী ও এলাকাবাসীর মারামারিতে কয়েকজন আহত হয়েছে বলে শুনেছি। তবে কেউ অভিযোগ দেয়নি।