দীর্ঘ দেড় যুগ পর বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’র বহুল প্রতীক্ষিত দ্বিবার্ষিক সম্মেলন। আগামী ১৬ জুলাই(বুধবার) উপজেলার খলিলুর রহমান ডিগ্রি কলেজ মাঠে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
সম্মেলন ঘিরে ইতোমধ্যে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ ও তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। মাঠ প্রস্তুতিসহ শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে। দীর্ঘদিন পর অনুষ্ঠিত এই সম্মেলন মোল্লাহাটের রাজনৈতিক অঙ্গনে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
সম্মেলনে উপজেলা বিএনপির নেতৃত্বে আসার লড়াইয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দলের দুই প্রভাবশালী নেতা—সাবেক সভাপতি চৌধুরী সেলিম আহমেদ এবং শেখ হাফিজুর রহমান। উভয় প্রার্থীই ইতোমধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করেছেন।
শেখ হাফিজুর রহমান সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী করেছেন সদ্য সাবেক জেলা যুবদলের সভাপতি, সাবেক ছাত্রনেতা ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হারুন আল রশিদকে। অন্যদিকে, চৌধুরী সেলিম আহমেদ তার প্যানেলে সাধারণ সম্পাদক পদে রেখেছেন বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব ও সাবেক যুবদল নেতা মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিয়াকে।
সম্মেলন ঘিরে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে শুরু হয়েছে প্রচার-প্রচারণা ও গণসংযোগ। তবে শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি উদ্বেগজনক ঘটনাও ঘটেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্যানেলের অনুসারীদের মধ্যে ইতোমধ্যে একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে, যাতে অন্তত ৫০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
এমন সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের মধ্যে সম্মেলন ঘিরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
তবে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সম্মেলন নির্বিঘ্ন ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবেলায় পর্যাপ্ত পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন থাকবে বলে আশ্বস্ত করা হয়েছে।
দীর্ঘ ১৭ বছর পর মোল্লাহাটে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই রাজনৈতিক আয়োজন এখন আলোচনার কেন্দ্রে। এখন দেখার বিষয়—সম্মেলন কেবল নেতৃত্ব নির্বাচনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে, নাকি এর মাধ্যমে উপজেলাজুড়ে শুরু হয় একটি নতুন রাজনৈতিক অধ্যায়।