বাগেরহাট জেলায় রোববার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ও সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচী পালিত হয়েছে। ভোর থেকে সময় যত গড়িয়েছে, পিকেটিংয়ের তীব্রতাও বেড়েছে।সড়ক- মহাসড়ক ছিল ফাঁকা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা ছিল লক্ষ্যনীয়।
বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলায় ঢাকা-খুলনা-মোংলা ও বাগেরহাট মহাসড়কের সংযোগ রয়েছে। উপজেলার কাটাখালী মোড়, টাউন নওয়াপাড়া মোড়, ফকিরহাট বিশ^রোড মোর, ফলতিতা-বটতলাসহ বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে সড়ক মহাসড়কে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মী ও সাধারণ মানুষ সড়কে অবস্থান নিয়ে পিকেটং করছেন। রাস্তায় টায়ার জালিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। তবে জরুরী সেবা ও এম্বুলেন্স চলাচল করার সুযোগ করে দিয়েছে রাস্তায় থাকা লোকজন।
এদিকে বাগেরহাটের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আজকের অভ্যান্তরিন পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। বন্ধ রয়েছে ফকিরহাটের সকল দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। তবে জরুরী প্রয়োজনে কিছু ফার্মেসী খোলা রয়েছে।
হরতাল সমর্থনে সড়কগুলোতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ফকিরহাট উপজেলা বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী। বাগেরহাট জেলার ৯টি উপজেলায় একযোগে হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচী পালিত হওয়ার খবর শোনা গেছে। পাশর্^বর্তী মোল্লাহাট উপজেলার সড়ক ও মহসড়কে পিকেটিংয়ের খবর শোনা গেছে। বাগেরহাট সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি কমিটির ব্যানারে এই হরতাল ও অবরোধে ফকিরহাট উপজেলায় সর্বস্তরের মানুষের সতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহণ দেখা গেছে।
ফকিরহাট উপজেলায় হরতাল ও অবরোধের নেতৃত্ব দিচ্ছেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি শেখ কামরুল ইসলাম গোরা, সাধারণ সম্পাদক শেখ শরিফুল কামাল কারিম, সাংগঠনিক সম্পাদক খান লিয়াকত আলী, ফকিরহাট উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর এবিএম তৈয়াবুর রহমান, সেক্রেটারী আবুল আলা মাসুম সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ।
হরতাল ও অবরোধ সম্পর্কে সহকারী পুলিশ সুপার (ফকিরহাট সার্কেল) মো. রবিউল ইসলাম শামীম বলেন, “আমাদের কয়েকটি টহল টিম ফকিরহাট ও মোল্লাহাট উপজেলার বিভিন্ন সড়কে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক আছে।”
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে বাগেরহাটে চারটি আসন ছিল। ৩০ জুলাই দুপুরে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাগেরহাটের চারটি আসনের মধ্যে একটি অংশ কমিয়ে জেলায় তিনটি আসন করার প্রাথমিক প্রস্তার দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এর পর থেকেই বাগেরহাট জেলাবাসী ক্ষোভে ফুঁসে ওঠেন। একের পর এক কর্মসূচি দিতে থাকে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি। এর অংশ হিসেবে বিক্ষোভ মিছিল, জেলা প্রশাসক ও নির্বাচন কমিশনের দপ্তরে স্মারকলিপি, ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন, বাগেরহাট-খুলনা-মোংলা-ঢাকা রাস্তা অবরোধ করেছেন বাগেরহাটবাসী। আজ বাগেরহাট জেলায় সর্বাত্মক অবরোধ ও হরতাল পালিত হচ্ছে।
আসন কমানো অথবা বহাল রাখার বিষয়ে ২৫ আগস্ট নির্বাচন কমিশনের দপ্তরে শুনানি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।