সব কিছু
facebook channelkhulna.tv
খুলনা বুধবার , ২০শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ৫ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
মাইলস্টোনের শিক্ষার্থীদের বাঁচানো মাহরীন চৌধুরী জিয়াউর রহমানের ভাতিজি | চ্যানেল খুলনা

মাইলস্টোনের শিক্ষার্থীদের বাঁচানো মাহরীন চৌধুরী জিয়াউর রহমানের ভাতিজি

শিক্ষার্থীদের প্রতি মমত্ববোধ ও দায়িত্ববোধের অসাধারণ উদাহরণ তৈরি করে গেলেন মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাহসী শিক্ষিকা মাহরীন চৌধুরী। গতকাল সোমবার (২১ জুলাই) বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমানটি তাঁর প্রতিষ্ঠানে বিধ্বস্ত হয়, তখনো তিনি অক্ষত ও সুস্থ ছিলেন। কিন্তু বিপদের মুখেই তিনি ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন নিজের সন্তানের মতো ছাত্র-ছাত্রীদের বাঁচাতে। বিনিময়ে নিজের প্রাণ বিলিয়ে দিয়েছেন।

ঢাকার জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় গতকাল রাতে মারা যান মাহরীন চৌধুরী। তাঁর শরীরের ১০০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল বলে আবাসিক সার্জন শাওন বিন রহমান জানান। লাইফ সাপোর্টে নেওয়ার আগে স্বামী মনছুর হেলালের সঙ্গে তাঁর শেষ কথা হয়েছিল।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে নীলফামারীর জলঢাকা পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের বগুলাগাড়ী এলাকার রাজারহাট চৌধুরী পাড়ায় নিজ বাড়িতে সাংবাদিকদের সামনে সেসব কথা তুলে ধরেন তিনি।

‘মাঝ রাতে হাসপাতালের আইসিইউতে মাহেরিনের সাথে আমার শেষ কথা হয়। এ সময় আমার হাত তাঁর নিজের বুকের সঙ্গে চেপে ধরে বলেছিল, তোমার সাথে আর বুঝি দেখা হবে না!’, চাপা কান্নার সঙ্গে কথাগুলো বলছিলেন মনসুর হেলাল।

মনছুর হেলাল জানান, ক্লাস শেষে মাহরীন চৌধুরী শিক্ষার্থীদের নিয়ে বের হওয়ার সময় বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। এ সময় তিনি সামান্য আঘাত পান। কিন্তু চেখের সামনে দেখতে পাচ্ছেন ২০ থেকে ২৫ জন শিক্ষার্থী ভেতরে আটকা পড়ে গেছে। তাদেরকে উদ্ধারে তিনি ভেতরে ঢুকে পড়েন এবং বেশ কয়েকজনকে উদ্ধার করেন। এমন সময় আবার বিধ্বস্ত বিমানে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হলে গিয়ে তিনি অসুস্থ্য হয়ে পড়লে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

মাহরীন চৌধুরী নীলফামারীর জলঢাকার মৃত মহিতুর রহমান চৌধুরীর মেয়ে ও জলঢাকা বগুলাগাড়ী স্কুল অ্যান্ড কলেজের অ্যাডহক কমিটির সভাপতি। দুই মাস আগে এই দায়িত্ব নেন। তিনি ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন এবং সেখানেই বড় হয়েছেন। তবে বাবার জন্মস্থানে তিনি বারবার এসেছেন এবং দাদু বাড়িতে রাত কাটিয়েছেন। এসময় গ্রামের মানুষদের সুখেদুঃখে পাশে দাঁড়িয়েছেন।

মাহরীন চৌধুরীর খালাতো ভাই দৈনিক জনকন্ঠে ঢাকায় কর্মরত সংবাদকর্মী রুমি চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মাহরীনের বাবা মহিতুর রহমান চৌধুরী ছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আপন খালাতো ভাই। জলঢাকার এ বাড়িতে জিয়াউর রহমান বেশ কয়েকবার এসেছিলেন।’

মাহরীন চৌধুরী সবসময় এলাকার গরীর মানুষদের খোঁজখবর নিতেন, সামর্থ্য অনুয়ায়ী আর্থিক সহযোগিতা করতেন।

তাঁদের প্রতিবেশী আব্দুস সামাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, দুই ঈদ ছাড়াও মাঝেমধ্যে গ্রামে আসতেন মাহরীন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কালভার্ট নির্মাণে সহযোগিতা করেছেন। ফলে শিক্ষানুরাগী হিসেবে বগুলাগাড়ী স্কুল অ্যান্ড কলেজের এডহক কমিটির সভাপতি হিসেবে তাকে মনোনীত করেছে এলাকাবাসী।

মাহরীন চৌধুরীকে নিয়ে ফেসবুকে স্মৃতিচারণ করেন তাঁর বিশ্ববিদ্যালয় সহপাঠী আলী আহমেদ মাবরুর। তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, ‘মাহরীন আপা আমার মানারাতের সহপাঠী ছিলেন। আমরা একইসাথে মানারাত বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে মাস্টার্স করেছিলাম। বয়সে আমার একটু সিনিয়র হবেন। বনেদি ঘরের মানুষ, তবে একদম সাদামাটাভাবে চলাফেরা করতেন। আমাকে ছোট ভাইয়ের মতো স্নেহ করতেন। তিনি উত্তরাতে থাকতেন, সে হিসেবে আমার প্রতিবেশীও। উত্তরায় যখন হাতে কয়েকজন মানুষ ছিল, বেশিরভাগ অংশই যখন জলাভূমি ও গাছ গাছালিতে পরিপূর্ণ, তখন থেকে এই এলাকায় তাদের বসতি।

গত কয়েক বছরে প্রথমে বাবা এবং পরে মাকে মাহরীন চৌধুরী। সেই তথ্য তুলে ধরে মাবরুর লিখেছেন, ‘পরিবারের বড়ো সন্তান হিসেবে সকল ভাই বোন বরাবরই তাকে অভিভাবক হিসেবেই গন্য করতেন। তার ছেলে আছে দুটো, ওরাও বেশ বড়ো হয়ে গেছে।’

আমার বাচ্চারা সব পুড়ে মারা যাচ্ছে, আমি কীভাবে সহ্য করি—মৃত্যুর আগে স্বামীকে বলেন মাহরীন চৌধুরীআমার বাচ্চারা সব পুড়ে মারা যাচ্ছে, আমি কীভাবে সহ্য করি—মৃত্যুর আগে স্বামীকে বলেন মাহরীন চৌধুরী

তিনি আরো লিখেন, ‘মাহেরিন আপা অনেক বছর যাবৎ মাইলস্টোন প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত। তাকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন শাখায় তারা কাজে লাগিয়েছে। আপা এখন সিনিয়র টিচার। সেই হিসেবে বাড়তি কিছু দায়িত্বও ছিল তার দিয়া বাড়ি শাখায়। গতকাল যখন স্কুলের ওপর বিমানটি আছড়ে পড়ে, তিনি তার স্বভাবসুলভ মায়ের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। নিশ্চিত আগুনে পুড়ে যাওয়া থেকে কমপক্ষে ২০জনের বেশি ছাত্র ছাত্রীকে তিনি সেইভ করেছেন। কিন্তু এই সাহসী ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে গিয়ে কখন নিজের জীবনকেই বিপন্ন করে ফেলেছেন, তা হয়তো তিনি বুঝতেও পারেননি।

দুর্ঘটনার পরই তার সাথে পরিবারের সবার যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। মধ্যরাতে তার লাশ যখন বাসায় আনা হয়, আমি দেখতে গিয়েছিলাম। ওনার স্বামী আমাকে দেখে জড়িয়ে কেঁদে ফেললেন। বললেন, ‘জানিস তোর আপা পরশু রাতেও তোর কথা বলেছিল।’

https://channelkhulna.tv/

জাতীয় আরও সংবাদ

৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার পরিকল্পনা এনসিপির, ঢাকার আসনে লড়বেন নাহিদ

নির্বাচন পর্যন্ত সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরে কড়াকড়ি

গুম কমিশন হচ্ছে না, শক্তিশালী হচ্ছে দন্তহীন মানবাধিকার কমিশন

অন্তর্বর্তী সরকারের ১৩ মাসে ৪০ বিচারবহির্ভূত হত্যার অভিযোগ

গণভোট নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা: আসিফ নজরুল

১২৮ জুলাই যোদ্ধার গেজেট বাতিল করেছে সরকার

চ্যানেল খুলনা মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন  
সম্পাদক: মো. হাসানুর রহমান তানজির
It’s An Sister Concern of Channel Khulna Media
© ২০১৮ - ২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | চ্যানেল খুলনা.বাংলা, channelkhulna.com.bd
যোগাযোগঃ ৫ কেডিএ বানিজ্যিক এলাকা, আপার যশোর রোড, খুলনা।
প্রধান কার্যালয়ঃ ৫২/১, রোড- ২১৭, খালিশপুর, খুলনা।
ফোন- 09696-408030, 01704-408030, ই-মেইল: channelkhulnatv@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য অধিদফতরে অনলাইন নিউজ পোর্টাল নিবন্ধনের জন্য আবেদিত।