খুলনার দাকোপে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলনেত্রী ক্লাসে ঢুকে স্কুল শিক্ষককে মারপিট করেছে। ঘটনার প্রতিবাদে তাৎক্ষনিক বিক্ষোভ মিছিল করে বিচার দাবী করে শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে মিছিলকারী শিক্ষার্থীদের হুমকি দেওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসছে শিক্ষার্থী ও সচেতন মহল।
উপজেলা সদর চালনায় অবস্থিত উপজেলার সেরা স্কুল মোহাম্মাদ আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ইংরেজী শিক্ষক দেবব্রত বিশ্বাস মহিলা দলের নেত্রীর হাতে মারপিটের শিকার হয়েছেন। ভুক্তভোগী শিক্ষক জানায়, বিদ্যালয়ের নবম শ্রেনীর শিক্ষার্থী আমিনুল শেখ ক্লাস রুমে গান বাজনা ও অসাদাচারন করে। যে কারনে আমি ওই ছাত্রকে শাসন করি। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষার্থী আমিনুলের মা শাহিনুর বেগম ও মালা কাজী গত সোমবার সকালে ক্লাস রুমে ঢুকে আমাকে আকস্মিক মারপিট করে।
তারা দু’জনই চালনা পৌরসভা জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সদস্য বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় তাৎক্ষনিক শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে তারা সেই মুহুর্তে স্কুল ত্যাগ করে। এরপর উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা শিক্ষকের উপর হামলা কারীদের বিচার দাবী করে চালনা শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে। এক পর্যায়ে থানা পুলিশ শাহিনুর বেগমকে নিজেদের হেফাজাতে নিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। বিকালে স্কুলের পরিচালনা কমিটি, শিক্ষকবৃন্দ এবং অভিযুক্ত নারীনেত্রী পক্ষের মাঝে সমঝোতা হলে পুলিশ শাহিনুর বেগমকে ছেড়ে দেয়। কিন্তু সোমবার সন্ধ্যায় এবং মঙ্গলবার সকালে পৃথক পৃথক ভাবে স্কুলের ৪ শিক্ষার্থীকে নারী নেত্রীদের বিরুদ্ধে মিছিল করার অপরাধে মারপিট ও দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। বিষয়টি জানা জানি হলে শিক্ষক শিক্ষার্থী অভিবাবক এবং সচেতন মহলের মাঝে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দুপুরে খুলনা জেলা বিএনপির সদস্য শেখ শাকিল আহমেদ দিলু এবং চালনা পৌরসভা বিএনপির সাবেক সদস্য সচীব আলামিন সানার নেতৃত্বে দলের একটি অংশ স্কুলে গিয়ে শিক্ষকদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে প্রয়োজনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থার পরামর্শ দেন। এ সময় স্কুলের প্রতিষ্ঠাতার পুত্র এবং চালনা পৌর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক বিল্লাল মোল্যা প্রধান শিক্ষকের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের না জানিয়ে এভাবে সমঝোতা করা উচিত হয়নি।
এ ব্যাপারে স্কুলের প্রধান শিক্ষক হাশেম আলী শেখ বলেন প্রশাসনের সহযোগীতায় ঘটনাটি আপাতাত নিরসন হয়েছে। তবে শিক্ষকদের নিরাপত্তার দাবীতে আমাদের সামগ্রীকভাবে মানববন্ধন ও স্বারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচী আছে। নতুন করে ছাত্রদের হুমকি দেওয়ার ঘটনায় তারা আইনী পদক্ষেপের বিষয়টি আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে তিনি জানান।