দক্ষিণ গাজা উপত্যকার নাসের হাসপাতালে ইসরায়েলি হামলায় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের চারজন সাংবাদিকসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, নিহত চার সাংবাদিক হলেন—বার্তা সংস্থা রয়টার্সের ফটোসাংবাদিক হোসাম আল-মাসরি, আল-জাজিরার ফটোসাংবাদিক মোহাম্মদ সালামা, অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি), ইনডিপেনডেন্ট আরবিসহ কয়েকটি গণমাধ্যমের সাংবাদিক মরিয়ম আবু দাকা ও এনবিসি নেটওয়ার্কের সাংবাদিক মুয়াজ আবু তাহা।
হামাস পরিচালিত বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা জানিয়েছে, দখলদার ইসরায়েলের প্রথম হামলায় বেশ কয়েকজন নিহত হন। এরপর উদ্ধারকারীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে দ্বিতীয় হামলাটি ঘটে।
ঘটনাস্থলের ছবিগুলোতে দেখা যায়, হাসপাতালের ওপরের তলা থেকে ধূসর ধোঁয়া বের হচ্ছে, সেখানে ক্ষয়ক্ষতির চিহ্ন স্পষ্ট। হাসপাতালের বাইরে মানুষজন বিশৃঙ্খলভাবে দৌড়াচ্ছে এবং চিৎকার করছে, সেই সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সের হর্নও শোনা যাচ্ছে। একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একজন চিকিৎসক সাংবাদিকদের কাছে রক্তাক্ত কাপড় দেখাচ্ছেন, ঠিক তখনই আরও একটি হামলা হয়।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, তাদের ক্যামেরাম্যান হোসাম আল-মাসরি নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন। এপি জানিয়েছে, তাদের হয়ে কাজ করা ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক মরিয়ম দাকাও নিহত হয়েছেন। এপি ৩৩ বছর বয়সী এ সাংবাদিকের মৃত্যুতে ‘হতবাক ও শোকাহত’ বলে জানিয়েছে।
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আল-জাজিরার ৫ সাংবাদিক নিহতগাজায় ইসরায়েলি হামলায় আল-জাজিরার ৫ সাংবাদিক নিহত ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কার্যালয় এ হামলার নিন্দা জানিয়ে এটিকে আন্তর্জাতিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছে। কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট (সিপিজে) বলেছে, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ, তারা সেটা মিথ্যা প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে। বরং আজকের হামলায় এটা আবারও প্রমাণিত হলো, গাজায় সাংবাদিকেরা কখনোই নিরাপদ নন।
এর আগে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) আল-জাজিরার বিশিষ্ট সাংবাদিক আনাস আল-শরিফকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করে। তারা অভিযোগ করেছিল, তিনি হামাসের একটি সন্ত্রাসী সেলের প্রধান হিসেবে কাজ করেছেন।
উল্লেখ্য, ১০ আগস্ট আল-শিফা হাসপাতালের কাছে ইসরায়েলের হামলায় আল-জাজিরার পাঁচজনসহ ছয়জন সাংবাদিক নিহত হন। ওই ঘটনার ঠিক দুই সপ্তাহ পর আজ সোমবার আবার এ হামলা হলো।