পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় অস্ত্রোপচারের সময় এক নবজাতকের বাঁ পা ভেঙে ফেলার অভিযোগ উঠেছে পার্থ সমদ্দার নামের এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে।
ঘটনার পর রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাতে ওই শিশুর স্বজনদের লাঞ্ছিত করে ক্লিনিক থেকে বের করে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে।
ওই শিশুর স্বজনদের অভিযোগ, গত বৃহস্পতিবার প্রসববেদনা নিয়ে উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের গোলবুনিয়া গ্রামের সিদ্দিক মিয়ার মেয়ে ও রফিকুলের স্ত্রী মিম বেগম পৌর শহরের জমজম ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি হন। পরে ওই রাতেই মিমের অস্ত্রোপচার করেন ওই ক্লিনিকের চেয়ারম্যান পার্থ সমদ্দার। অস্ত্রোপচারের কিছুক্ষণ পরই টিকার কথা বলে নবজাতকের পায়ে একটি ইনজেকশন পুশ করা হয়। পরদিন থেকে নবজাতকের বাঁ পা ফোলা শুরু করে এবং কান্নাকাটি বাড়তে থাকে। বিষয়টি চিকিৎসককে জানালে তাঁরা কর্ণপাত না করে উল্টো ওই ক্লিনিকের স্টাফ ও নার্সরা নবজাতকের স্বজনদের সঙ্গে অসদাচরণ করে ক্লিনিক থেকে বের করে দেন। পরে অন্যত্র এক্স-রে করে জানতে পারেন, অস্ত্রোপচারের সময় নবজাতকের পা ভেঙে গেছে। তবে অস্ত্রোপচারের সময় পা ভাঙার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন চিকিৎসক পার্থ সমদ্দার।
নবজাতকের মা মিম বলেন, ‘সমস্যা দেখে ডাক্তারের কাছে গেলে তিনি বলেন, আপনাদের কোনো গ্যাঞ্জাম করার দরকার নেই, বাচ্চাকে নিয়ে বরিশালে চলে যান। কিন্তু আমাদের কাছে তো সেই রকম টাকাপয়সা নেই, আমরা কীভাবে চিকিৎসা করব।’
নবজাতকের নানি তাসলিমা বলেন, ‘সকালে বাচ্চার মা আমাকে দেখালে আমি নার্সদের কাছে যাই। তাঁরা বলেন, আপনার নাতির পা ভেঙে গেছে। আমি ডাকাডাকি করলে তাঁরা বলেন, ডাকাডাকি করবেন না, হসপিটালের দুর্নাম হবে। আমরা এখানে এক্স-রে করতে চাইলে ডাক্তার বলেন, এখানে হবে না, বরিশালে চলে যান।’
জমজম ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চেয়ারম্যান পার্থ সমদ্দার বলেন, ‘এ ধরনের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। তার পায়ের ব্যথা ওষুধের রিঅ্যাকশনসহ বিভিন্ন কারণে হতে পারে। যেহেতু আমি শিশু বিশেষজ্ঞ নই, তাই তাদের শিশু বিশেষজ্ঞের অধীনে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি।’
কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শংকর প্রসাদ অধিকারী বলেন, নবজাতকের স্বজনেরা লিখিত অভিযোগ দিলে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুয়েল ইসলাম বলেন, ‘এ ধরনের কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’