পটুয়াখালীর দুমকীতে জুলাই আন্দোলনে শহীদ বাবার কবর জিয়ারত করে ফেরার পথে কলেজশিক্ষার্থীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের মামলায় তিন কিশোরকে সাজা দিয়েছেন আদালত। এদের মধ্যে দুই কিশোরকে ১৩ বছর করে, এবং একজনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২২ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নীলুফার শিরিন এ রায় দেন। এ সময় আদালতে তিন আসামি উপস্থিত ছিল। এ সময় আদালতে ভুক্তভোগী কিশোরীর মা ও দাদাসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হচ্ছে- সাকিব মুন্সি, সিফাত মুন্সি ও ইমরান মুন্সি। ধর্ষণ মামলার এই তিন আসামিকে ১০ বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া পর্নগ্রাফি আইনে সাকিব ও সিফাতকে আরও তিন বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়।
এদিকে ধর্ষণ মামলার রায়ে অসন্তোষের কথা জানিয়েছে ভুক্তভোগীর পরিবার। তারা বলেন, আমাদের প্রত্যাশা ছিল আসামিদের ফাঁসি বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হবে।
প্রসঙ্গত, এ মামলার আসামিদের বিচার হয়েছে শিশু আইনে। এ কারণে আসামিদের সর্ব্বোচ্চ শাস্তি ১০ বছর দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহত পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলার শহীদের বড় মেয়ে ওই ভুক্তভোগী কিশোরী। তিনি দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী ছিলেন। চলতি বছরের ১৮ মার্চ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বাবার কবর জিয়ারত শেষে নানাবাড়ি যাওয়ার পথে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। আসামিরা তার মুখ চেপে জোরপূর্বক একটি বাগানবাড়িতে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। তিনি চিৎকার করলেও আশেপাশে কোনো বাড়িঘর না থাকায় কেউ শুনতে পায়নি। একপর্যায়ে অভিযুক্তরা ভিকটিমের ছবি তোলে এবং কাউকে কিছু বললে তা ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়ার ভয়ভীতি দেখিয়ে চলে যায়। পরের দিন দুমকী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী কিশোরী।
অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ প্রথমে অভিযুক্ত সাকিব মুন্সিকে আটক করে। পরবর্তীতে সিফাত মুন্সি ও কথিত প্রেমিক ইমরান মুন্সিকে আটক করা হয়। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হওয়ার জন্য পরবর্তীতে আসামিদের ডিএনএ টেস্ট করানো হয়।
গত ২৬ এপ্রিল ঢাকায় শেখেরটেক ৬ নং রোডে একটি ভাড়া বাসা থেকে ওই কিশোরীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে দুমকী উপজেলার পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের নলদোয়ানি গ্রামে বাবার কবরের পাশে দাফন করা হয়।