ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পালিয়ে যাননি, তিনি যেতে বাধ্য হয়েছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রনিযুক্ত (স্টেট ডিফেন্স) আইনজীবী মো. আমির হোসেন। আজ বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আমির হোসেন বলেন, আজ অ্যাটর্নি জেনারেল যে বক্তব্য দিয়েছেন তার প্রেক্ষাপটে দুটো জবাব দিয়েছি। উনি (অ্যাটর্নি জেনারেল) বলতে চাইছেন যে আমার আসামি শেখ হাসিনা পালিয়ে গিয়েছেন। আমি বলেছি যে আমার আসামি পালিয়ে যাননি। উনি এ দেশ থেকেই যেতে চাননি, তা বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসেছে। উনি (শেখ হাসিনা) এ কথাও বলেছেন যে- আমাকে প্রয়োজনে এখানে হত্যা করে মাটি দেন, তবু আমি কোথাও যাবো না। কিন্তু সে সময় প্রেক্ষাপট এমন দাঁড়িয়েছিল যে, উনি যেতে বাধ্য হয়েছেন। উনি হেলিকপ্টারে গেছেন। কীভাবে গেছেন দেশের মানুষ দেখেছে। অতএব পালিয়ে যাওয়া বলে চোরের মতো লুকিয়ে যাওয়াটাকে। তবে এই পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টা আমি বিরোধিতা করেছি।
তিনি বলেন, দ্বিতীয় কথার জবাবে বলেছি যে, একটি প্রজন্মকে শেষ করে দিতে চেয়েছে আমার মক্কেলরা। একটা মানবতাবিরোধী অপরাধ হতে হলে একটি সম্প্রদায়কে বা একটি জাতিকে অথবা একটি গোষ্ঠীকে নিশ্চিহ্ন করার প্রক্রিয়া প্রচেষ্টা থাকতে হয়; সে হিসাবে মানুষকে হত্যা করতে হয় যা হিটলার করেছিল। ইহুদিদের ক্ষেত্রে জেনোসাইড ও মানবতাবিরোধী অপরাধ দুটোই প্রযোজ্য। কিন্তু এখানে প্রযোজ্য নয়। এটাই আমার মূল বক্তব্য। তাই বাদীপক্ষ যেমন ন্যায়বিচার চান, আসামিপক্ষে আমরাও ন্যায়বিচার চাই। তবে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার দায়িত্ব ট্রাইব্যুনালের। সেটা তারা নিশ্চিত করবেন। যা দেশের ও পৃথিবীর মানুষ দেখবে বলে আশা করছি।
আরেকটা কথা বলেছি, একটি রাজনৈতিক দলের নেতা বিদেশে ছিলেন, তখন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন প্রয়োজনে দেশে এসে বিচারের মুখোমুখি হন। এ প্রসঙ্গে রাষ্ট্রনিযুক্ত এই আইনজীবী বলেন, শেখ হাসিনা সে সময় কথাগুলো বললেও পরবর্তীতে উনি আসেননি। আমিও তার পরিপ্রেক্ষিতে আজ বলেছি, যে কারণে উনি দেশে আসেননি একই কারণে শেখ হাসিনাও আসেননি। আমি মনে করি সন্দেহাতীতভাবে শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে মামলা প্রমাণ করতে সক্ষম হননি রাষ্ট্রপক্ষ। তাই তারা সসম্মানে খালাস পাবেন বলেও আমার প্রত্যাশা।