
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচারের প্রতিবাদে খুলনায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর খুলনা-১ আসনের মনোনীত প্রার্থী ও দলটির হিন্দু শাখার নেতা কৃষ্ণ নন্দী। তিনি অভিযোগ করেন, হিন্দু হয়ে জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দেয়ার কারণে তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে শিপন বসুকে ব্ল্যাকমেইলার ও আন্তর্জাতিক চাঁদাবাজ আখ্যা দিয়ে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থার দাবি জানান খুলনা-১ (দাকোপ-বটিয়াঘাটা) আসনের এ প্রার্থী।
বাবু কৃষ্ণ নন্দী অভিযোগ করেন, ভারত থেকে অবস্থান করে শিপন বসু তার ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে বারবার ফোনে হুমকি দেন এবং প্রশ্ন তোলেন তিনি হিন্দু হয়ে কেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দিলেন। কৃষ্ণ নন্দীর দাবি, ওই ব্যক্তি আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেছেন, জীবননাশের হুমকি দিয়েছেন এবং ধর্মীয় অনুভূতিকে উসকে দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছেন।
তিনি আরও বলেন, তার জনপ্রিয়তা ও মনোনয়ন পাওয়ায় ঈর্ষান্বিত একটি মহল এআই প্রযুক্তিতে ভুয়া ছবি তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার ছড়াচ্ছে। এসব সম্পূর্ণ সাজানো, ভিত্তিহীন এবং রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যমূলক মন্তব্য করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বাবু কৃষ্ণ নন্দী বলেন, গত ১ ডিসেম্বর খুলনা বিভাগের ৮ দলীয় সম্মেলনে জামায়াতের আমির ড. শফিকুর রহমান তাকে দাকোপ-বটিয়াঘাটা (খুলনা-১) আসনে প্রার্থী ঘোষণা করার পরেই একটি সংগঠিত চক্র অপপ্রচার শুরু করে। তার ভাষায়, আমাকে মনোনয়ন দেওয়াই প্রমাণ করে জামায়াতে ইসলামী ধর্ম-বর্ণ-সম্প্রদায় নির্বিশেষে বাংলাদেশের সব নাগরিককে সমানভাবে মূল্য দেয়।
তিনি দাবি করেন, তার মনোনয়ন ঘোষণার পর সারা দেশের হিন্দু জনগোষ্ঠীর মধ্যে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের প্রতি ইতিবাচক সাড়া তৈরি হয়েছে। এর পরপরই ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তাকে লক্ষ্য করে মিথ্যা প্রচারণা শুরু হয়।
এক প্রশ্নের উত্তরে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, আমি কোন ট্রামকার্ড হিসেবে ব্যহার হচ্ছি না। যেহেতু হিন্দুদেরও বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধিত্ব করা দরকার সেই হিসেবে আমাকে পাঠিয়েছে। যদি ওখান থেকে মানুষ আমাকে ভোট দিয়ে সংসদে পাঠায় আমি হিন্দুদের পক্ষে কথা বলবো তাদের প্রতিনিধিত্ব করবো যাতে হিন্দুরা বাংলাদেশের ভালো থাকে।
সাবেক প্রার্থী মাওলানা শেখ মোহাম্মদ আবু ইউসুফের সঙ্গে বিরোধের গুঞ্জন প্রসঙ্গে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, মনোনয়ন পরিবর্তনের পরও তিনি আমাকে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছেন। আমরা একসঙ্গে মাঠে কাজ করছি এ নিয়ে কোনো ভুল বোঝাবুঝি নেই।
সংবাদ সম্মেলনের শেষে তিনি আসন্ন নির্বাচনে জয়ী হয়ে দাকোপ-বটিয়াঘাটার মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে সংসদে ভূমিকা রাখার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন এবং সবার দোয়া ও সহযোগিতা চান।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বটিয়াঘাটা উপজেলা আমির মাওলানা শেখ মোহাম্মদ আবু ইউসুফ, নায়েবে আমির মাওলানা হাবিবুর রহমান, বটিয়াঘাটা উপজেলা নায়েবে আমির, মাওলানা আশরাফ আলী, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন খুলনা জেলা শাখার সহকারী সেক্রেটারি আল আমিন গোলদার, ডুমুরিয়া উপজেলা সনাতনী কমিটির সভাপতি হরিদাস মন্ডল, সেক্রেটারি অধ্যক্ষ দেবপ্রসাদ মন্ডল, ঢাকাস্থ খুলনা ক্লাবের সভাপতি সরদার আব্দুল ওয়াদুদ সহ অন্যান্য নেতারা।


