সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে প্রবেশের অভিযোগে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে গ্রেপ্তার বাংলাদেশি পুলিশ কর্মকর্তা আরিফুজ্জামান রংপুরের আবু সাঈদ হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামি।
গতকাল শনিবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হাকিমপুর সীমান্ত চৌকির কাছ থেকে বিএসএফ তাঁকে আটক করে। পরে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়। বিএসএফের দাবি, সাতক্ষীরার কাকডাঙ্গা সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মোহাম্মদ আরিফুজ্জামান গত বছরের ৫ আগস্টের আগে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার ছিলেন। পরে তাঁকে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলা এপিবিএন-২-এ বদলি করা হয়।
সেখানে তিনি ওই বছরের ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন এবং ১৪ অক্টোবর থেকে বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি নীলফামারী পৌরসভার বেগম রোকেয়া সরণি রোডের বাবুপাড়ায়।
১৪ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব নাসিমুল গনি স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মজিদ আলী বলেন, ‘পুলিশ কর্মকর্তা আরিফুজ্জামানের নামে কয়েকটি মামলা রয়েছে। তার নামে ওয়ারেন্ট রয়েছে। তার গ্রেপ্তার হওয়ার বিষয়ে আমার জানা নেই। বাংলাদেশের ট্যারিটরির মধ্যে আনা হলে নিয়ম অনুযায়ী ওই মামলাগুলোয় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরিফুজ্জামানের নীলফামারী বাড়ির এক প্রতিবেশী জানান, মোহাম্মদ আরিফুজ্জামান ওরফে জীবন ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তাঁর বাবা মৃত আফছার আলী আদালতের উকিলের সহকারী (মোক্তার) ছিলেন। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং পরে আইন সভার সদস্য (এমএলএ) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১৬ জুলাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত হন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ১২ ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। এ ঘটনায় আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, রংপুর রেঞ্জের সাবেক উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আবদুল বাতেন, রংপুর মহানগর পুলিশের সাবেক কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান, রংপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার আল মারুফ হোসেন, সহকারী কমিশনার মো. আরিফুজ্জামানসহ ১৭ জনের নাম উল্লেখ এবং ৩০ থেকে ৩৫ জনকে অজ্ঞাতনামা দেখিয়ে একটি হত্যা মামলা করেন।
অনুপ্রবেশকালে আটক জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তার পরিচয় প্রকাশ করছে না ভারতঅনুপ্রবেশকালে আটক জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তার পরিচয় প্রকাশ করছে না ভারত পরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলামসহ সাতজনের নাম মামলায় নথিভুক্ত করার জন্য সম্পূরক এজাহার দেন রমজান আলী। আদালতের আদেশে তাঁদেরও ওই মামলায় নামীয় এজাহারভুক্ত আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।