ধারাবাহিক নাটক ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট: সিজন ৫’-এর বিভিন্ন পর্বে অশ্লীলতা, সামাজিক অবক্ষয় ও নৈতিক বিচ্যুতির অভিযোগ তুলে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মহি উদ্দিন।
এসব অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত করা হয়েছে নির্মাতা কাজল আরেফিন অমি, অভিনেতা মারজুক রাসেল, জিয়াউল হক পলাশ, সাইদুর রহমান পাভেল, শিমুল শর্মা ও বুম ফিল্মস প্রোডাকশন হাউসকে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মহি উদ্দিন এই লিগ্যাল নোটিশ পাঠান। লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়েছে, ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ নাটকের পঞ্চম সিজনের ১-৮ পর্বে এমন বহু সংলাপ রয়েছে, যা অশ্লীল, ডাবল মিনিং এবং সমাজে—বিশেষ করে কিশোর-তরুণদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়, নাটকের সংলাপে ‘ডেট’, ‘উনিশ/বিশ’, ‘টাকা হলে সিসা খেতে পারতাম’, ‘বাঙালি পোশাক লুঙ্গি’ ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করে এমনভাবে কথা বলা হয়েছে, যা নীতিনৈতিকতা পরিপন্থী। পাশাপাশি ‘ফিমেল’, ‘কিডনি’, ‘দই’ ইত্যাদি ডায়ালগগুলো তরুণদের মুখে মুখে ঘুরছে, যা সামাজিক শালীনতা ও পারিবারিক রুচির পরিপন্থী। এমন সংলাপ নারীদের অবমাননা করে বলে দাবি করেছেন আইনজীবী।
নোটিশে আরও বলা হয়, নির্মাতা কাজল আরেফিন অমি নিজেই গত ১৪ জুন এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, নাটকটি এখন সব বয়সী মানুষের জন্য তৈরি করা হচ্ছে। অথচ নাটকের ভাষা, ভাব ও উপস্থাপন একদমই পরিবারবান্ধব নয়। বরং এতে সামাজিক মূল্যবোধ, ধর্মীয় অনুশাসন ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে আইনজীবী মহি উদ্দিন বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী হিসেবে আমি মনে করি, এ ধরনের নাটক সম্প্রচার বন্ধ হওয়া উচিত। যেহেতু বাংলাদেশের নাটক খুবই সমৃদ্ধ একটি শিল্প, একসময় আমরা হুমায়ূন আহমেদ, আবদুল্লাহ আল-মামুনসহ প্রথিতযশা নির্মাতাদের নাটক পরিবারের সঙ্গে বসে দেখতাম। কিন্তু এই নাটকগুলো পরিবার নিয়ে দেখার মতো নাটক নয়। আঞ্চলিকতা একটা ভাষার অলংকার হতে পারে, কিন্তু এই নাটকে আঞ্চলিকতার নামে যে সমস্ত গালি তুলে আনা হচ্ছে, সেটা খুবই আপত্তিকর।
জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা-২০১৪ এবং জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা-২০১৭ অনুযায়ী, শিশু ও কিশোরদের মানসিক গঠনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে—এমন কনটেন্ট প্রচার করা অপরাধ। অথচ এই নাটকে একের পর এক অশ্লীল ও আপত্তিকর সংলাপ সামাজিকমাধ্যমে ভাইরাল হচ্ছে এবং সেগুলো কিশোরদের আচরণ ও ভাষায় স্থায়ী প্রভাব ফেলছে।