পাবনার চাটমোহরে প্রাণের ভিলেজ মিল্ক কালেকশন সেন্টার থেকে বিপুল ভেজাল দুধ জব্দ করা হয়েছে। এ সময় দুধ সংগ্রহ, মজুত ও সরবরাহের দায়ে প্রাণ হাবের তিন কর্মকর্তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
একই সঙ্গে ভেজাল দুধ তৈরির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
সোমবার (২১ জুলাই) সকাল থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত একটি গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুসা নাসের চৌধুরী উপজেলার ছাইকোলা ইউনিয়নের লাঙ্গলমোড়া গ্রামে ও ছাইকোলা চৌরাস্তায় প্রাণের ভিলেজ মিল্ক কালেকশন সেন্টারে অভিযান চালান।
এ সময় গোয়েন্দা সংস্থাটির ১৭ সদস্যের একটি টিম, পাবনার অতিরিক্ত নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক মোফাজ্জল হোসেন, উপজেলা নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক আসলাম হোসেন ও থানা-পুলিশ উপস্থিত ছিল।
ইউএনও ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুসা নাসের চৌধুরী সকালে উপজেলার ছাইকোলা ইউনিয়নের লাঙ্গলমোড়া গ্রামে ভেজাল দুধ তৈরিতে জড়িত ব্যক্তিদের বাড়িতে অভিযান চালান। এ সময় কয়েকজন পালিয়ে গেলেও এক নারীসহ ছয়জনকে আটক করা হয়। জব্দ করা হয় দুধ, তেল ও বিভিন্ন প্রকার কেমিক্যাল।
আটক ব্যক্তিরা হলেন লাঙ্গলমোড়া গ্রামের শাহাদত হোসেনের ছেলে সাইদুল ইসলাম (৪৫), সেকেন্দার আলীর ছেলে খলিলুর রহমান (৬৫), সাইদুল ইসলামের ছেলে লিটন হোসেন (১৯), হযরত আলীর ছেলে নিজাম উদ্দিন (৫০), খবির উদ্দিনের ছেলে রুবেল হোসেন (২০) ও রিফাজ আলীর স্ত্রী মাজেদা খাতুন (৩৫)।
তাঁদের মধ্যে খলিলুর রহমানের ছেলে রুবেল হোসেন ভেজাল দুধ তৈরির সঙ্গে জড়িত থাকায় তাঁকে এক সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণ করানোর শর্তে খলিলুর রহমানকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
রুবেলের বড় ভাই অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী তাঁর দায়িত্ব নেন। অন্যদের নামে নিয়মিত মামলা রুজু করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
এরপর দুপুরে ইউএনও ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুসা নাসের চৌধুরী ছাইকোলা চৌরাস্তায় প্রাণের কালেকশন সেন্টারে অভিযান চালান। সেখানে তেল ও ডিটারজেন্টযুক্ত দুধ পাওয়া যায়। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত সেন্টারে সংরক্ষিত প্রায় আড়াই হাজার লিটার দুধ জব্দ করে জনসম্মুখে বিনষ্ট করা হয়। ভেজাল দুধ সংগ্রহ, মজুত ও সরবরাহের দায়ে প্রাণ কোম্পানির এই সেন্টারের তিন কর্মকর্তাকে ছয় মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুসা নাসের চৌধুরী।
দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন এরিয়া ম্যানেজার পাবনার ফরিদপুর উপজেলার জন্তিহার গ্রামের শহিদুল সরকারের ছেলে শামসুল আলম (৩৬), সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার চক চিথুলিয়া গ্রামের মোজাম্মেল হকের ছেলে জহির রায়হান (২৭) ও পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার করমচা গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে নাজমুল হোসাইন (৩৫)। তাঁদের জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে ইউএনও ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুসা নাসের চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এই অভিযান চালানো হয়। আমরা কয়েকজনকে আটক করেছি। তিনজনকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অন্যদের নামে নিয়মিত মামলা দেওয়া হয়েছে। ভেজাল দুধ তৈরির সঙ্গে জড়িত যারা পালিয়ে গেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’