গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির পরিচালনা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেছেন, ‘আমরা কোনো নিরাপত্তাবেষ্টনীর মধ্যে ধর্মীয় অনুষ্ঠান করতে চাই না। সেটা দুর্গাপূজা হোক বা ঈদে মিলাদুন্নবী হোক।’
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ সনাতন পার্টি (বিএসপি) আয়োজিত ‘দুর্গাপূজার নিরাপত্তা: অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর, বৈষম্যমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে রাষ্ট্রের করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।
সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘মন্দিরে হামলা, পূজামণ্ডপে আক্রমণ বহু বছর ধরে হয়ে আসছে। কিন্তু এর বিচার হয়নি, বরং বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় পুলিশ, প্রশাসন ও বিচার বিভাগ নষ্ট হয়েছিল। এখনো সেই পরিস্থিতি থেকে আমরা বের হতে পারিনি।
‘আজ ওয়াজ মাহফিলে আলেমরা মানুষকে সচেতন করছেন, যেন পূজার সময় কোনো সমস্যা না হয়। এটি ইতিবাচক উদ্যোগ। তবে শুধু ওয়াজ নয়, মসজিদের খুতবায়ও সম্প্রীতির বার্তা উচ্চারিত হতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর গঠিত ঐকমত্য কমিশনে অনেক রাজনৈতিক দলকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। যারা আলোচনার নেতৃত্ব দিচ্ছে, তাদের সঙ্গে গণমানুষের সম্পর্ক নেই। স্বাধীনতার পর থেকেই সনাতন সম্প্রদায়ের সঙ্গে বিমাতাসুলভ আচরণ করা হচ্ছে। অথচ ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধসহ প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে আমরা সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছি।’
রোহিঙ্গা ইস্যু প্রসঙ্গে গণফোরামের এই নেতা বলেন, ‘জাতিসংঘ মহাসচিবসহ আন্তর্জাতিক মহল রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের কথা বললেও উল্টো নতুন করে তাদের প্রবেশ ঘটছে। সীমান্ত পরিস্থিতিও জটিল।’
এ সময় গত ২৫ নভেম্বর ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর মুক্তির দাবি জানান সুব্রত চৌধুরী।
আলোচনায় বিএসপির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুমন কুমার রায় বলেন, ‘১৯৪৭ সাল থেকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নির্যাতিত হয়ে আসছে। পাকিস্তানে “শত্রু সম্পত্তি আইন” বাতিল হলেও বাংলাদেশে তা “অর্পিত সম্পত্তি আইন” নামে বহাল রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে সংখ্যালঘুরা সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করলেও তাদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত হয়নি। ২০০৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ আমলেই সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে, অথচ কোনো ঘটনার বিচার হয়নি।’