খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের ডুমুরিয়া ফায়ার সার্ভিস ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মাঝামাঝি গোলনা রাহাবাড়ির সামনে মেঘনা পেট্রোলিয়ামের জালানি তেলবাহী ট্যাঙ্কলরি ও যাত্রীবাহী মাহিন্দ্রার মুখোমুখি সংঘর্ষে কয়রা সদরের আবু বকর সিদ্দিক (রা.) জামে মসজিদের ইমাম ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের শিক্ষক হাফেজ মঈনুল ইসলাম, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাধারণ কেয়ারটেকার মাওলানা আব্দুর রশীদ ও মাহেন্দ্রাচালক রফিকুল ইসলামসহ সাতজন হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ ও শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করে বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর খুলনা অঞ্চল নেতৃবন্দ।
বিবৃতিদাতারা হলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও খুলনা অঞ্চল পরিচালক মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা অঞ্চল সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, টিম সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা মশিউর রহমান, মাস্টার শফিকুল আলম, মুহাদ্দিস হাফেজ রবিউল বাশার, খুলনা জেলা আমীর মাওলানা এমরান হুসাইন ও সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান।
নেতৃবৃন্দ এক শোক বিবৃতিতে বলেন, এই অনাকাঙ্ক্ষিত হতাহতের ঘটনায় আমরা গভীরভাবে শোকাহত। এই ভয়াবহ ট্যাঙ্কলরি ও মাহিন্দ্রার সংঘর্ষে মানুষের জানমালের যে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা সহজে পূরণ হওয়ার নয়। আমরা মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার কাছে দোয়া করছি এইসব স্বজনহারা পরিবার-পরিজন যেন শিগগিরই তাদের এ বিরাট শোক ও ক্ষয়-ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হন।’
শোক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, আমরা নিহতদের রুহের মাগফিরাতের জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া করছি এবং তাদের পরিবার-পরিজন ও আহতদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি। আহতদের দ্রুত সুচিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণে এবং নিহত ও আহতদের পরিবার-পরিজনদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেয়ার জন্য নেতৃবৃন্দ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান। সেই সঙ্গে ট্যাঙ্কলরি ও মাহিন্দ্রার সংঘর্ষের কারণ অনুসন্ধান করে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণেরও আহ্বান জানান নেতৃবৃন্দ।
এদিকে এ দূর্ঘটনার খবর পেয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা অঞ্চল সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে যান। এ সময় তিনি আহতদের চিকিৎসার সার্বিক খোজ খবর নেন। এ ছাড়া নিহত ও আহতদের পরিবারের সাথে কথা বলেন এবং সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
উল্লেখ্য, খুলনায় মেঘনা পেট্রোলিয়ামের জালানি তেলবাহী ট্যাঙ্কলরি ও যাত্রীবাহী মাহিন্দ্রার মুখোমুখি সংঘর্ষে কয়রা সদরের আবু বকর (রা.) এর ইমাম হাফেজ মইনুল ইসলামসহ ৩ জন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আরো ৪ জন গুরুতর আহত হয়েছে। শনিবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে ডুমুরিয়া উপজেলার খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের ফায়ার সার্ভিস ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মাঝামাঝি গোলনায় এ দুর্ঘটনাটি ঘটে।
নিহতরা হলেন, কয়রা সদরের অবস্থিত আবু বকর সিদ্দিক (রা.) জামে মসজিদ এর ইমাম ২ নং কয়রা গ্রামের মতিয়ার রহমান সানার ছেলে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের শিক্ষক হাফেজ মঈনুল ইসলাম (৩৫), কশোডাঙ্গা গ্রামের মৃত নূরু সানার ছেলে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাধারণ কেয়ারটেকার মাওলানা আব্দুর রশিদ (৫০), ভান্ডারপোল গ্রামের আলী হোসেন গাজীর ছেলে মাহিন্দ্রাচালক মো. রফিকুল ইসলাম।
এছাড়া আহত চারজন হলেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাধারণ কেয়ারটেকার হাফেজ মাওলানা মনিরুজ্জামান, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের শিক্ষক আব্দুস সাত্তার ও শিক্ষক হাফেজ ইউনুস আলী এবং মহিনুর ইসলাম। তাদেরকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
খর্ণিয়া হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শিমুল মন্ডল প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে জানান, শনিবার সকালে কয়রা উপজেলা থেকে মাহিন্দ্রাতে (খুলনা-থ-১১-০১৭৫) কয়েকজন খুলনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বকেয়া বেতন-ভাতা প্রদানসহ ৫ দফা দাবিতে মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদানের উদ্দেশে রওনা দেন। অপরদিকে খুলনা থেকে মেঘনা পেট্রোলিয়ামের জ¦ালানি তেলবাহী ট্যাঙ্কলরি (যশোর -ড-৪১-০০০৪) সকাল সোয়া ১০টার দিকে ডুমুরিয়া উপজেলার খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের ফায়ার সার্ভিস ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মাঝামাঝি গোলনানামক স্থানে পৌঁছালে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ইমাম ও মাহিন্দ্রাচালকসহ তিনজন নিহত হয়। এছাড়া দুুর্ঘনায় মাহিন্দ্রার আরো ৪ জন যাত্রী আহত হয়। তিনি বলেন, ঘাতক জ¦ালানি তেলবাহী ট্যাঙ্কলরি আটক করা হয়েছে। তবে চালক ও হেলপার পলাতক।