
সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য ইন্দ্রজীৎ দাশ বাপীর মা অনিমা রাণী দাশকে হত্যার উদ্দেশ্যে লোহার রড ও বাঁশের লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করা হয়েছে। প্রতিবেশীরা তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে তালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন। তিনি জালালপুর গ্রামের মৃত সন্তোষ দাশের স্ত্রী। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।
ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) সকাল ৮টার দিকে উপজেলার জালালপুর গ্রামে। নিজের দখলীয় জমির সুপারি গাছ থেকে সুপারি পাড়ার সময় এ হামলার ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, শুক্রবার সকালে অনিমা রাণী দাশ শ্রমিক আবুল হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে সুপারি পাড়তে গেলে আগে থেকে ওঁত পেতে থাকা জালালপুর গ্রামের মৃত কেসমত কারিগরের ছেলে সিদ্দিক কারিগর (৪৫) ও তার ভাই হযরত কারিগর (৪২) হত্যার উদ্দেশ্যে তার মাথায় লোহার রড দিয়ে আঘাত করে। আঘাত প্রতিহত করতে গেলে তার চোখের ওপর ও নিচে গুরুতর জখম হয় এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে পিটুনির ফলে ফুলে যায়।
এর আগে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরদিন গভীর রাতে ওই চক্রটি অনিমা রাণীর পরিবারের ৪৫ শতক জমির পানের বরজ কেটে মাটিতে মিশিয়ে দেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। ৭ আগস্ট সকালে জালালপুর গ্রামের মৃত কালিপদ দাশের ছেলে হরেকৃষ্ণ দাশ বরজে পানের গাছ কাটতে নিষেধ করলে তাকে দা দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করা হয় এবং দার উল্টো পিঠের আঘাতে তার বাম হাত ভেঙে দেওয়া হয়। পরে তাকে কিল, ঘুষি ও লাথি মেরে অজ্ঞান করা হয়। চিকিৎসার জন্য গ্রাম্য ডাক্তার গেলে তাকেও মারধর করে ফেরত পাঠানো হয়। পরবর্তীতে রবিন দাশ ভ্যানে করে তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাকেও মারধর করা হয়। এতে এলাকায় বসবাসরত সংখ্যালঘুদের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
প্রত্যক্ষদর্শী জালালপুর গ্রামের পরিতোষ দাশের ছেলে হিমাদ্রি দাশ ও স্বরজিৎ দাশের ছেলে পল্লব দাশ জানান, চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে তারা দেখেন সিদ্দিক কারিগর লোহার রড দিয়ে অনিমা রাণী দাশকে পিটাচ্ছে। তারা বাধা দিতে গেলে তাদেরও মারধর করা হয়। পরে স্থানীয়রা একত্রিত হয়ে আহত নারীকে উদ্ধার করে তালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
আহতের বড় ছেলে সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য ইন্দ্রজীৎ দাশ বাপী বলেন, তিনি ব্যবসায়িক কাজে এলাকার বাইরে থাকার সুযোগে তার মাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালানো হয়েছে। অতীতেও একই চক্র তাদের জমি দখল ও সহিংস কর্মকাণ্ড চালিয়েছে। তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
তালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম বলেন, ঘটনার বিষয়ে তিনি অবগত হয়েছেন। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


