
ঐতিহাসিক জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপির উদ্যোগে শুক্রবার (৭ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত হয়েছে বর্ণাঢ্য র্যালি ও আলোচনা সভা। মহানগরীর জিয়াহল চত্বরে আয়োজিত এই সমাবেশে বক্তারা বলেন, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সেনাবাহিনী ও সর্বস্তরের জনগণের সার্বিক সমর্থনের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হন। এই বিপ্লবের মূল চরিত্র ছিল জিয়াউর রহমানের প্রতি সেনাবাহিনী ও জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন। জনগণের সেই অকৃত্রিম ভালোবাসা ও আস্থার কারণেই তিনি মহানায়কে পরিণত হন। ৭ নভেম্বরের বিপ্লবের মাধ্যমে রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হয়েছিল, জাতি পেয়েছিল নতুন দিকনির্দেশনা ও আত্মবিশ্বাস।
খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি অ্যাড. শফিকুল আলম মনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাবেক সংসদ সদস্য ও খুলনা-৫ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী আলি আসগর লবি। এছাড়া বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাড. মোমরেজুল ইসলাম, সাবেক ছাত্রনেতা জিয়াউর রহমান পাপুল, মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ সাদী, মাসুদ পারভেজ বাবু, চৌধুরী হাসানুর রশীদ মিরাজসহ মহানগর, থানা, উপজেলা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। বক্তারা বলেন, ৭ নভেম্বর জাতীয় জীবনের এক অবিস্মরণীয় দিন। সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সেদিন মুক্ত হয়েছিল দেশ, পূরণ হয়েছিল রাজনৈতিক শূন্যতা। এই বিপ্লবের মধ্য দিয়েই বহুদলীয় গণতন্ত্র, বাক ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং আইনের শাসনের ভিত্তি স্থাপিত হয়। তারা বলেন, জিয়াউর রহমান ছিলেন এক নিষ্কলুষ ও সাহসী সৈনিক, যিনি জাতীয়তাবাদী চেতনার বীজ বপন করে জাতিকে উন্নয়ন, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির পথে পরিচালিত করেছিলেন। বক্তারা আরও বলেন, আজও দেশে প্রকৃত অর্থে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। চব্বিশের ৫ আগস্টের পর দেশবাসী কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেও এখনো ন্যায়বিচার, জবাবদিহি ও সুশাসনের অঙ্গীকার বাস্তবায়িত হয়নি। দেশের বিভিন্ন জনপদে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটছে, মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে আইনি প্রতিকার থেকে। তারা বলেন, দেশকে পদানত করার জন্য একটি কুচক্রী মহল এখনও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। যে চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরে সেনা ও জনগণ ঐক্যবদ্ধভাবে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় এগিয়ে এসেছিল, সেই একই চেতনা আজও প্রাসঙ্গিক। বক্তারা আহ্বান জানান— সেই চেতনা ধারণ করে বহুদলীয় গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া, দুর্নীতি ও দুঃশাসনকে চিরতরে বিদায় জানানো এবং ন্যায়, সাম্য ও মানবিক মর্যাদার সমাজ গঠনে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার।
সমাবেশ শেষে জিয়াহল চত্বর থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি কেডিএ এভিনিউ হয়ে রয়্যাল চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। হাজার হাজার নেতাকর্মীর অংশগ্রহণে র্যালি পুরো নগরীতে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি করে। ধানের শীষের পক্ষে স্লোগানে মুখরিত ছিল খুলনার প্রধান প্রধান সড়ক। র্যালী শেষে পথসভায় বক্তারা বলেন, “৭ নভেম্বরের চেতনা আমাদের জাতীয় জীবনের প্রেরণা হয়ে থাকবে-যতদিন না পর্যন্ত দেশে প্রকৃত গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও মানুষের মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হয়।”


