
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে চলছে কুকুরের স্পে-নিউটার ও টিকাদান কার্যক্রম। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় পথপ্রাণী কল্যাণ সংস্থা ‘ফারি ফ্রেন্ডস ফাউন্ডেশন’-এর উদ্যোগে এ কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিপ্রেমী শিক্ষার্থীদের একটি নিবেদিত দল ‘স্নেহটেইল’ এতে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছে।
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) স্পে-নিউটার কার্যক্রম শুরু হয়েছে, যা আজও চলমান রয়েছে। পরবর্তীতে টিকাদান কর্মসূচি চালু করা হবে।
ফারি ফ্রেন্ডস ফাউন্ডেশনের যুগ্ম সম্পাদক ফারহাদুজ্জামান (রুদ্র) বলেন, ২ জন চিকিৎসকসহ ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল এই কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছে। প্রথম দিনে (শুক্রবার) ২৯টি কুকুরকে স্পে-নিউটার করা হয়েছে। শনিবারও এই কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। পুরো কর্মসূচি চলাকালে ৬০ থেকে ৬৫টি কুকুরকে স্পে-নিউটার করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। অপারেশনের পর কুকুরগুলোর শারীরিক অবস্থা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে এবং কোনো জটিলতা দেখা দিলে তাৎক্ষণিক চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আগামী ২৮ অক্টোবর র্যাবিস ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে। প্রতিটি কুকুরের গলায় পরিচয় বেল্ট এবং কানের একটি অংশে বিশেষ চিহ্ন দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, এই উদ্যোগ ক্যাম্পাসে কুকুরের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি পথপ্রাণীদের কল্যাণ নিশ্চিত করবে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ কার্যক্রম অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য একটি মডেল হিসেবে বিবেচিত হতে পারে, যা পথকুকুরদের প্রতি সহনশীল আচরণ ও সামাজিক দায়বদ্ধতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী ছাত্র বিষয়ক পরিচালক ড. তারেক বিন সালাম বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কুকুরের কারণে শিক্ষার্থীদের মাঝে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছিল। সে প্রেক্ষাপটে শিক্ষার্থীদের একটি দল বৈজ্ঞানিক ও প্রাণিবান্ধব পদ্ধতিতে কুকুর নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা উপস্থাপন করে। প্রশাসন সেই উদ্যোগের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করেছে। বিশেষ করে স্পে-নিউটার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো তৈরি, ঢাকা থেকে আগত চিকিৎসক দলের আবাসনের ব্যবস্থা, কুকুরদের পোস্ট-অপারেটিভ কেয়ার ইউনিট এবং দুই দিনের পর্যবেক্ষণের জন্য নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগসহ খাবারের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ রেজাউল করিম বলেন, প্রাণীর প্রতি সহনশীল আচরণ করা প্রতিটি মানুষের নৈতিক দায়িত্ব। বিশ্ববিদ্যালয় সবসময়ই বৈজ্ঞানিক, মানবিক ও পরিবেশবান্ধব পদক্ষেপ গ্রহণে আন্তরিক। ক্যাম্পাসের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি পথপ্রাণীদের জন্য এই উদ্যোগ প্রশংসনীয় ও সময়োপযোগী। এই কর্মসূচির ফলে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস আরও নিরাপদ হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।


