কোরবানির ঈদে সবারই কমবেশি মাংস খাওয়া হয়। নিজের বাড়ি কিংবা অন্যের বাড়ির দাওয়াতে মাংসই থাকে মূল আইটেম। তবে সব খাবারের মতো মাংসও অতিরিক্ত খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এরমধ্যে কিছু কিছু মানুষের জন্যে মাংস খাওয়া স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ায়। যাদের জন্য পরিমিত পরিমাণে মাংস খাওয়াই স্বাস্থ্যকর।
হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা
যাদের হার্ট অ্যাটাক, হাই ব্লাড প্রেসার বা রক্তনালীর কোনো সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য লাল মাংস (গরু, খাসি) বেশি খাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ। লাল মাংসে রয়েছে প্রচুর স্যাচুরেটেড ফ্যাট, যা কোলেস্টেরল বাড়িয়ে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। দিনে ৫০–৭০ গ্রাম চর্বিমুক্ত মাংসই যথেষ্ট।
ডায়াবেটিস রোগী
ডায়াবেটিস রোগীদের খাদ্যতালিকায় নিয়ন্ত্রিত কার্বোহাইড্রেট ও প্রোটিন দরকার। মাংস বেশি খেলে রক্তে গ্লুকোজ হঠাৎ বেড়ে যেতে পারে, বিশেষ করে যদি তেল-মসলা বেশি হয়। প্রতিদিন ৭০–১০০ গ্রামের বেশি মাংস খাওয়া যাবে না।
কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি
কিডনি রোগীদের জন্য বেশি প্রোটিন খাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ, কারণ অতিরিক্ত প্রোটিন রক্তে ইউরিয়া বাড়িয়ে কিডনির ওপর চাপ সৃষ্টি করে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী দিনে ৫০–৭০ গ্রাম মাংস গ্রহণ করা যায়।
ওজন বেশি বা স্থূল ব্যক্তিরা
মাংস বিশেষত চর্বিযুক্ত অংশ অতিরিক্ত ক্যালোরি দেয়, যা ওজন বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। স্থূলতা থেকে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও হরমোনাল সমস্যা দেখা দিতে পারে। লাল মাংস সপ্তাহে ২–৩ বার অল্প পরিমাণে খাওয়া নিরাপদ।
গ্যাস্ট্রিক বা হজমে সমস্যা থাকলে
গরুর মাংস হজম হতে সময় নেয়। তাই যাদের পেটে গ্যাস, বদহজম, পেট ফাঁপা, কোষ্ঠকাঠিন্য আছে, তারা মাংস খেলে সমস্যার ঝুঁকি বাড়ে। দিনে ৫০–৭০ গ্রাম মাংস খাওয়া যেতে পারে। রান্নায় আদা, জিরা, গোলমরিচ ব্যবহার করে হজমে সহায়ক করে তুলুন।
বয়স্ক ও কম চলাফেরা করা ব্যক্তিরা
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হজম শক্তি কমে যায়। অনেকেই ব্যায়াম করেন না বা ঘরে বসে থাকেন। তাদের শরীরে অতিরিক্ত ক্যালোরি সঞ্চিত হয়ে যায়। তাদের জন্যে দিনে ছোট পিস (৫০–৭০ গ্রাম) মাংস খাওয়া যথেষ্ট।
মাংস খাওয়া বাদ না দিয়ে সঠিক পরিমাণে খাওয়াটাই উত্তম। কারও জন্য পরিমিত মানে দৈনিক ৫০ গ্রাম, আবার কারও জন্য ১০০ গ্রাম হতে পারে। বয়স, রোগ, লাইফস্টাইল অনুযায়ী এই পরিমাণ নির্ধারণ করা উচিত।
