সব কিছু
facebook channelkhulna.tv
খুলনা শুক্রবার , ১৩ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২৭শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
মব নয়, আইনের শাসন চাই | চ্যানেল খুলনা

মব নয়, আইনের শাসন চাই

মো. ছাব্বির ফকির: ‘স্বাধীনতা, সাম্য ও মৈত্রী— এটি ফরাসি বিপ্লবের সময়কার একটি বিখ্যাত স্লোগান, যা পরবর্তীতে বিশ্বজুড়ে স্বাধীনতার সংগ্রামে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। এই স্লোগানটির অর্থ হলো— স্বাধীনতা : ব্যক্তির ইচ্ছানুযায়ী কাজ করার অধিকার, কারো দ্বারা অন্যায়ভাবে নিয়ন্ত্রিত না হওয়া। সাম্য: সমাজের সকল মানুষের সমান অধিকার, মর্যাদা এবং সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার অধিকার। মৈত্রী: পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ব ও সহযোগিতা, একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া। এই তিনটি ধারণা একটি স্বাধীন ও ন্যায়ানুগ সমাজের ভিত্তি স্থাপন করে। এখানেই প্রথম প্রশ্ন, বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে ১৯৭১ সালে। তখন থেকে এখন পর্যন্ত দেশের আপামর জনতা কি কখনো স্বাধীনতা, সাম্য ও মৈত্রী এই তিনটির একটিও পরিপূর্ণভাবে পেয়েছে? জুলাই আন্দোলন প্রথমে কোটাবিরোধী আন্দোলন থাকলেও পরবর্তীতে তা দেশের জনগণের গণতন্ত্র উদ্ধারের আন্দোলনে পরিণত হয়।

গত ১৬ বছরে দেশের মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছিল পতিত আওয়ামী লীগ সরকার। আমরা আশা করেছিলাম জুলাই আন্দোলনে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পরে যে নতুন সরকার গঠিত হয়েছে, সেই সরকার হবে জনতার সরকার। সেই সরকার সর্বদা জনতার সাথে কথা বলবে। কিন্তু দেশের বিভিন্ন স্থানে মব সৃষ্টি করে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চলছে তা দমাতে সরকারের কার্যকর কোনো পদক্ষেপ দেখছি না। বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মব রুখতে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বললেও তার কার্যকারিতা খুব কমই দেখছি। পত্র-পত্রিকার খবরের শিরোনামের দিকে লক্ষ রাখলে দেখা যায় দেশের কোথায় কী ঘটছে। অনেক সময় পত্রিকার সংবাদ পাঠ করে পাঠক পায় শান্তি আবার এই পাঠকই কিছু শিরোনাম দেখে আঁতকে ওঠে৷ কিছু শিরোনাম যদি উল্লেখ করি— বাংলানিউজ২৪ এর শিরোনাম— “টাঙ্গাইলে নিরাপত্তার শঙ্কায় বন্ধ হয়ে গেল ‘তাণ্ডব’ সিনেমা প্রদর্শন”। গত ৬ জুন শুক্রবার আসরের পর পারকি ইউনিয়ন ওলামা পরিষদের নেতৃত্বে এক বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। তারা সিনেমা প্রদর্শন বন্ধের দাবিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত আবেদনও জমা দেন। এরপর কালিহাতীতে মব সৃষ্টির ভয়ে নিরাপত্তার অভাবে বন্ধ হয়ে যায় সিনেমাটি। পত্র-পত্রিকায় দেখা যায়, হরহামেশাই মব জাস্টিসের নামে হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে একটি মহল। কোনো কোনো ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থানে গেলেও বেশিরভাগ ঘটনায় দেখা যায় তাদের নীরব ভূমিকা।

গত ৭ জুন ঈদের নামাজ পড়তে গিয়েছিলাম বাংলাদেশ বিশ্বশান্তি আহ্বায়ক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ বরকত উল্লাহ খান (রহ.)’র বাড়ি ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার গালিমপুর ইউনিয়নে। বরকত উল্লাহ খান (রহ.) এর প্রতিষ্ঠিত মসজিদ দরবারে এলাহি জামে মসজিদে ঈদের নামাজ শেষে ফেরার পথে স্থানীয় অন্য মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেয় আমরা নাকি হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে কটূক্তি করেছি অথচ আমরা আল্লাহ ও হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর হুকুম আহকাম পরিপূর্ণভাবে বিশ্বাস করি এবং পালন করি কিন্তু তারা আমাদের কোনো কথা না শুনে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করে আমাদের গাড়িবহরে হামলা চালায়। তাদের কাছে ছিল ধারালো দেশীয় অস্ত্র, ইট ও গাছের ডাল। আমাদের বহরের প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও বড় বাসের সবগুলোর গ্লাস তারা গুঁড়িয়ে দেয়। গাড়িতে থাকা মুসল্লিদেরও মব সৃষ্টিকারীরা লাটিপেটা করে। এতে বেশকিছু লোক আহত হন।

ঘটনাস্থলে স্থানীয় থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) উপস্থিত হলেও সে মব সৃষ্টিকারীদের পক্ষেই কথা বলেন এবং আমাদের গালমন্দ করেন এবং মর সৃষ্টিকারীদের না ধরে আমাদের দুজনকে গ্রেফতার করে নিয়ে যান। পরবর্তীতে থানায় মামলা করতে গেলে তিনি আমাদের মামলা নেননি বরং হামলাকারীদের মামলা নিয়েছেন। এই একই এলাকায় ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনের গণঅভ্যুত্থানের পরে যখন দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নীরব হয়ে পড়ে ঠিক তখন দরবারে এলাহী জামে মসজিদ ও তার পাশে অবস্থিত দুইতলা বিল্ডিং বুলডোজার এনে শুঁড়িয়ে দেয় মাদ্রাসার একদল শিক্ষার্থী। মসজিদে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করার ভিডিও ফুটেজে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে সবার মাথায় টুপি, পরনে পাজামা পাঞ্জাবি। এই যে বিভিন্ন সময় বাংলাদেশ বিশ্বশান্তি আহবায়ক সমিতির ওপর হামলা হচ্ছে এর প্রতিকার কে দেবে? এখানেই প্রশ্ন মব কি আইনের ধরাছোঁয়ার উর্ধে? এর দায় কী সরকারের নেই? মব এর কারণে জনগণের স্বাধীনতা, সাম্য ও মৈত্রী’ তিনটি অধিকারই হরণ হচ্ছে। দেশের মানুষ স্বস্তি চায়, শান্তিতে বাঁচতে চায়। মানুষ তার বাকস্বাধীনতা চায়, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা চায়।
লেখক: সাংবাদিক

https://channelkhulna.tv/

খোলামত আরও সংবাদ

কার স্বার্থে থমকে যাচ্ছে খুলনার নভোথিয়েটার?

এরশাদ শিকদার আমার চাকরিজীবনের আশীর্বাদ

‘ছাত্ররা আমার কথা শুনলো না, শুনলো ভুট্টো সাহেবের কথা’

প্রিয় মানুষকে অনুকরণ এবং অনুসরণের মাধ্যমে ভালোবাসার প্রকাশ ঘটে

সহনীয় মূল্যে ইলিশ : মডেল উদ্ভাবন

গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী ভিন্ন বাংলাদেশ, ক্রীড়াঙ্গনেও সফলতা

চ্যানেল খুলনা মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন  
DMCA.com Protection Status
সম্পাদক: মো. হাসানুর রহমান তানজির
It’s An Sister Concern of Channel Khulna Media
© ২০১৮ - ২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | চ্যানেল খুলনা.বাংলা, channelkhulna.com.bd
যোগাযোগঃ ৫ কেডিএ বানিজ্যিক এলাকা, আপার যশোর রোড, খুলনা।
প্রধান কার্যালয়ঃ ৫২/১, রোড- ২১৭, খালিশপুর, খুলনা।
ফোন- 09696-408030, 01704-408030, ই-মেইল: channelkhulnatv@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য অধিদফতরে অনলাইন নিউজ পোর্টাল নিবন্ধনের জন্য আবেদিত।