মো. ছাব্বির ফকির: পানির অপর নাম জীবন। আর সেই পানি যদি না মেল নদী মাতৃক এই দেশে তবে দুঃখের শেষ থাকে না। সম্প্রতি খুলনা মহানগরে দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির ভয়াবহ সংকট। শুস্ক মৌসুমের শুরুতেই ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় বিভিন্ন এলাকায় নলকূপে পানি উঠছে না। এতে করে সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে নিম্নবিত্ত ও বস্তিবাসী পড়েছে চরম দুর্ভোগে।
খুলনা মহানগরের রূপসা, বয়রা, এবং লবণচরা সোনাডাঙ্গা, গল্লামারীর অনেক বাসিন্দা দূর-দূরান্ত থেকে পানি সংগ্রহ করছেন। আর উচ্চবিত্ত পরিবার সাব-মারসিবল পাম্প বসিয়ে ব্যক্তিগতভাবে পানি উত্তোলনের ব্যবস্থা করলেও সাধারণ মানুষ তা পারছেন না।
নগরের বয়রার চম্পা নামে এক বাসিন্দা বলেন. আমাদের পানির কষ্ট বছরের সব সময় থাকে। তবে এই খরা মৌসুমে সব থেকে বেশি কষ্ট করতে হয় এই এলাকার মানুষদের। দু’একটি বাড়ির মালিক নিজ দ্বায়িত্বে সাবমারসিবল বসিয় এলাকার সাধারন মানুষের খাবার পানির ব্যবস্থা করেছেন সেখান থেকেই দূর দূরান্ত থেকে লোক এসে পানি নিয়ে যায়।
শেখ জাহিদুল ইসলাম নামে একজন বলেন, খুলনা নগরের ৩১ টি ওয়ার্ডের কোথাও পর্যাপ্ত পরিমানের পানি মিলছেনা। ওয়াসার পানি পুরো খুলনায় নাই। যেখানে যেখানে আছে সেখানেও পানি পাওয়া যাচ্ছেনা।
নগরের আরেক বসিান্দা সালমা বেগম বলেন, আমাদের পানির সঙ্কট আজ নুতন না। কখনো কেউ এদিকে খেয়াল করেননি। উচ্চবিত্তরা সাবমারসিবল বসিয়ে পানি তোলে. মদ্ধবিত্তরা অনেকে পানি কিনে খায়। বিপাকে বরেছি আমরা নিম্নবিত্তরা। আমাদের বিশুদ্ধ পানির কোনো ব্যবস্থা নেই।
খুলনা ওয়াসা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দৈনিক জনস্বাস্থ্য ২৪ কোটি লিটার চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ সম্ভব হচ্ছে মাত্র সাড়ে ৮ কোটি লিটার। ৩২ হাজার হোল্ডিং এখনো ওয়াসার সংযোগের বাইরে রয়েছে। ফলে পুরো শহরের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। পরিস্থিতি মোকাবিলায় নতুন পানি সরবরাহ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।
খুলনা ওয়াসা ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. হুসাইন শওকত বলেন, অনেক বাড়ির মালিক ওয়াসার পানির লাইন সংযোগ করেন নাই। তারা আবেদন করলে দ্রুতই প্রদান করা হবে। আর অনেক স্থানেই ওয়াসার পানির দেবার ব্যবস্থা নাই। সে সকল স্থানের ওয়াসার পানি পৌছানর জন্য ফেজ ২ নামে একটি প্রকল্পের হাতে নয়া হয়েছে। এই কাজ সম্পন্ন হলে খুলনা মহানগরীর পানির চাহিদা পূরণ হবে।
তিনি বলেন, মানুষের পানির কষ্ট যাতে না থাকে সেই দ্বায়িত্ব খুলনা ওয়াসার। আমরা সেই চেষ্টাই করে যাচ্ছি।
পানির এই সংকট দীর্ঘ হলে জনদুর্ভোগ আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা করছেন নগরবাসী। দ্রুত সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ চায় খুলনার মানুষ।