সব কিছু
facebook channelkhulna.tv
খুলনা বৃহস্পতিবার , ৬ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২১শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
সিলেট গ্যাস টারবাইন প্রকল্পে ব্যয় বেড়েছে ২০০ কোটি | চ্যানেল খুলনা

৮ কোটির জমি এবার ১৯ কোটিতে কিনবে বিদ্যুৎ বোর্ড!

সিলেট গ্যাস টারবাইন প্রকল্পে ব্যয় বেড়েছে ২০০ কোটি

সিলেট গ্যাস টারবাইন প্রকল্পে ব্যয় বেড়েছে ২০০ কোটি, মূল প্রকল্পে বরাদ্দ ছিল ৭০৭ কোটি ৫৩ লাখ ৪৮ হাজার টাকা,গাড়ি কেনার খরচ এক কোটি থেকে বেড়ে হয়েছে ৫ কোটি,ইঞ্জিনিয়ারিং ডিজাইন ‘শূন্য’ থেকে দাঁড়িয়েছে ২৪ কোটি, প্রশিক্ষণ ব্যয় ছয় কোটি ৫০ লাখ থেকে ‘শূন্য’ করা হয়েছে

চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে শুরু হয়েছিল বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নির্মাণকাজ। সাড়ে ছয় বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত বিদ্যুৎকেন্দ্রটির জন্য জমিই কিনতে পারেনি বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড! এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালকের বক্তব্য, ‘এতে ধীর গতি কোথায়!’

শুধু তা-ই নয়, মূল উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনায় (ডিপিপি) চার একর ভূমি অধিগ্রহণের জন্য বরাদ্দ ছিল আট কোটি টাকা। সম্প্রতি অনুমোদিত প্রকল্পটির দ্বিতীয় সংশোধন অনুযায়ী, এখন তার চেয়ে কম (৩ দশমিক ৯১ একর) পরিমাপের জমি কিনতে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড খরচ করবে ১৯ কোটি ১০ লাখ ৫১ হাজার টাকা। অর্থাৎ যথাসময়ে জমি না কেনায় সরকারকে ভূমি অধিগ্রহণেই গচ্চা দিতে হচ্ছে ১১ কোটি ১০ লাখ ৫১ হাজার টাকা।

এছাড়া বিদ্যুৎকেন্দ্রটির ১৬ হাজার ১৯২ ঘনমিটার ভূমি উন্নয়নে বরাদ্দ ছিল ৩৯ লাখ ১৮ হাজার ৫০০ টাকা। দ্বিতীয় সংশোধনী অনুযায়ী, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ভূমি উন্নয়নের পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ করেছে (৩১ হাজার ২৭৫ ঘনমিটার); এজন্য খরচের পরিমাণ চারগুণের বেশি অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এ টাকার পরিমাণ এক কোটি ৭৩ লাখ টাকা।

এভাবে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণে মূল প্রকল্পের বরাদ্দের চেয়ে বাড়তি ২০০ কোটি টাকার বেশি অনুমোদন চাইলে সম্প্রতি তা অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। মূল প্রকল্পে বরাদ্দ ছিল ৭০৭ কোটি ৫৩ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। দ্বিতীয় সংশোধনীতে তা করা হয়েছে ৯১০ কোটি ৬ লাখ ৮ হাজার টাকা।

আলোচিত এ বিদ্যুৎকেন্দ্র অর্থাৎ প্রকল্পটির নাম ‘কনভারশন অব ১৫০ মেগাওয়াট সিলেট গ্যাস টারবাইন পাওয়ার প্ল্যান্ট টু ২২৫ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্ল্যান্ট (দ্বিতীয় সংশোধন)’। সিলেট সদরের কুমারগাঁও মৌজায় এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে।

২০১৩ সালে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত এর জমি কেনা সম্ভব হয়নি, প্রকল্পের এত ধীরগতির কারণ কী? গত ১৭ সেপ্টেম্বর প্রকল্পের পরিচালকের (নাম জানাতে রাজি হননি) কাছে জানতে চাইলে তিনি পাল্টা প্রশ্ন রাখেন, ‘এতে ধীরগতি কোথায়?’

তিনি আরও বলেন, ‘ইসলামিক উন্নয়ন ব্যাংক (আইডিবি) টাকা দিতে চেয়েছিল, সেই ঋণ ওরা দেয়নি। পরে আমরা ২০১৭ সালে এর কাজ শুরু করেছিলাম। ২০১৭ সালে আন্তর্জাতিক টেন্ডার করে ২০১৮ সালে চুক্তি হয়। সে অনুসারে এটা হচ্ছে আর কী…।’

এর পরপরই ফোন রেখে দেন প্রকল্প পরিচালক। ধীরগতি সম্পর্কে প্রকল্প পরিচালক বক্তব্য তুলে ধরলেও জমি কেনার বিষয়ে তিনি সরাসরি কোনো উত্তর দেননি। এ বিষয়ে সরাসরি উত্তর জানতে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কাছে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভায় জমি অধিগ্রহণে দেরি হওয়ার কারণ জানতে চেয়েছিল পরিকল্পনা কমিশন। জবাবে বিদ্যুৎ বিভাগ জানিয়েছিল, জমির এলাকা একাধিকবার পরিবর্তনের কারণে জমি অধিগ্রহণে দেরি হয়েছে। যদিও কতবার পরিবর্তন হয়েছে, তা উল্লেখ করা হয়নি।

গত ১৭ সেপ্টেম্বর প্রকল্পের বাস্তবায়নকারী সংস্থা বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সচিব সাইফুল ইসলাম আজাদ  জানান, তাৎক্ষণিকভাবে তিনি এ বিষয়ে কিছু বলতে পারছেন না।

এ সময় তিনি  এ প্রতিবেদকের কাছ থেকে প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধিসহ বেশকিছু প্রশ্ন রেখে দেন। পরে ফোন করে প্রশ্নের উত্তর জানাবেন বলে জানান। তবে এরপর আর ফোন দেননি বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের এ সচিব।

মূল ডিপিপিতে এ প্রকল্পে যত বরাদ্দ ছিল, দ্বিতীয় সংশোধনীতে এসে সেসব প্রকল্পে কত টাকা বাড়তি বা কম ধরা হয়েছে, তা তুলে ধরা হলো-

ইঞ্জিনিয়ারিং ডিজাইন শূন্য থেকে ২৪ কোটি

এ প্রকল্পে ইঞ্জিনিয়ারিং ডিজাইন অ্যান্ড ইনসিডেন্টালস শূন্য থেকে হয়েছে ২৪ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এছাড়া বিজ্ঞাপন, আপ্যায়ন, সভা ইত্যাদি আনুষঙ্গিক ব্যয় শূন্য থেকে ১৫ লাখ টাকা করা হয়েছে।

গাড়ি কেনার খরচ ১ কোটি থেকে হয়েছে ৫ কোটি

প্রকল্পের সময় বাড়ার সঙ্গে গাড়ি কেনার খরচও বেড়েছে। এক কোটি দুই লাখ টাকা থেকে বেড়ে এ খরচ দাঁড়িয়েছে পাঁচ কোটি ১৫ লাখে।

যন্ত্রপাতি ও উপকরণে বরাদ্দ ছিল প্রায় ৫০৫ কোটি ৯ লাখ টাকা। এটি বেড়ে হয়েছে ৫৫২ কোটি ৬১ লাখ, পূর্ত কাজ ৫৫ কোটি ৯৭ লাখ থেকে বেড়ে হয়েছে ১০১ কোটি ১২ লাখ, ইরেকশন অ্যান্ড কমিশনিং ১৯ কোটি ৫৮ লাখ থেকে হয়েছে ৩১ কোটি ১১ লাখ টাকা।

পূর্ত কর্ম (অনাবাসিক) তিন কোটি ২৭ লাখ থেকে বেড়ে হয়েছে চার কোটি সাত লাখ, পূর্ত কর্ম (আবাসিক) এক কোটি ৯৮ লাখ থেকে চার কোটি ৪৯ লাখ, অফিস সরঞ্জাম ও আসবাবপত্র ১৭ লাখ থেকে ৬২ লাখ টাকা নির্ধারণ হয়েছে।

ভাতা ৬৮ লাখ থেকে বেড়ে ২ কোটি ২২ লাখ

কর্মকর্তাদের বেতন বরাদ্দ প্রায় ৮৪ লাখ থেকে বেড়ে হয়েছে দুই কোটি ৫৫ লাখ টাকা। কর্মচারীদের বেতন ৩০ লাখ থেকে বেড়ে হয়েছে এক কোটি ১৫ লাখ, ভাতাদি ৬৮ লাখ থেকে হয়েছে দুই কোটি ২২ লাখ, পরিচালনা, মেরামত ও সংরক্ষণে ১৫ লাখ থেকে করা হয়েছে ৭৪ লাখ টাকা।

যেখানে খরচ কমেছে

প্রশিক্ষণের জন্য বরাদ্দ ছয় কোটি ৫০ লাখ টাকা থেকে কমিয়ে শূন্য করা হয়েছে। ওয়ারেন্টি পিরিয়ড অপারেশন আট কোটি নয় লাখ থেকে কমে হয়েছে তিন কোটি ৩ লাখ টাকা।

এছাড়া আরও বেশকিছু খাতে ব্যয় কমানো হয়েছে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হচ্ছে। এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রে প্রাকৃতিক গ্যাসকে দক্ষভাবে ব্যবহার করা যায়। এ পদ্ধতিতে একই পরিমাণ গ্যাস দিয়ে বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়। এজন্য সিলেট ১৫০ মেগাওয়াট গ্যাস টারবাইন বিদ্যুৎকেন্দ্রকে ২২৫ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রে উন্নীত করতে প্রকল্পটি নেয়া হয়।

প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে শুরু হওয়া এ প্রকল্প ২০১৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল। শেষ করতে না পারায় দুই বছর ছয় মাস সময় বাড়িয়ে ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়। তবে এ মেয়াদ বৃদ্ধির অনুমোদন একনেক সভায় হয়নি। তারপরও কাজ শেষ করতে না পারায় একনেক সভায় প্রকল্পের ব্যয় এবং মেয়াদ বাড়ানো হয়। দুই বছর বাড়িয়ে ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়। তৃতীয় দফায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে করা হয় ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত।

এ প্রকল্পের আওতায় ৭৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার স্টিম টারবাইন জেনারেটর সেট ও যন্ত্রাংশ সংগ্রহ এবং স্থাপন, হিট রিকভারি স্টিম জেনারেটর সংগ্রহ ও স্থাপন, অতিরিক্ত উৎপাদিত ৭৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে ইভাকুয়েশন সুবিধা স্থাপন, কেমিক্যাল ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপন, ইনস্ট্রুমেন্টস ও কন্ট্রোল সিস্টেম স্থাপন, পরামর্শ সেবা গ্রহণ এবং আনুষঙ্গিক পূর্ত নির্মাণকাজ।

https://channelkhulna.tv/

সারাদেশ আরও সংবাদ

৫০ লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে দলবল নিয়ে চট্টগ্রামে ব্যবসায়ীর বাড়িতে এলোপাতাড়ি গুলি

শেরপুরে এনসিপির ১৫ নেতার পদত্যাগ

পতাকা বৈঠক শেষে তিন বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল বিএসএফ

মার্কিন নারীর শ্লীলতাহানির দায়ে যুবকের ৭ বছরের কারাদণ্ড

চিকিৎসককে মারধরের অভিযোগ: স্বাস্থ্য খাত সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক রনির বিরুদ্ধে মামলা

মাই টিভির চেয়ারম্যান নাসির উদ্দীন ৫ দিনের রিমান্ডে

চ্যানেল খুলনা মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন  
সম্পাদক: মো. হাসানুর রহমান তানজির
It’s An Sister Concern of Channel Khulna Media
© ২০১৮ - ২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | চ্যানেল খুলনা.বাংলা, channelkhulna.com.bd
যোগাযোগঃ ৫ কেডিএ বানিজ্যিক এলাকা, আপার যশোর রোড, খুলনা।
প্রধান কার্যালয়ঃ ৫২/১, রোড- ২১৭, খালিশপুর, খুলনা।
ফোন- 09696-408030, 01704-408030, ই-মেইল: channelkhulnatv@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য অধিদফতরে অনলাইন নিউজ পোর্টাল নিবন্ধনের জন্য আবেদিত।