
ঘুমের মধ্যে স্বামী সিরিঞ্জ দিয়ে শরীরে পারদ প্রবেশ করিয়েছেন বলে মৃত্যুর আগে অভিযোগ করেছেন স্ত্রী। ভারতের বেঙ্গালুরুতে এ ঘটনা ঘটেছে বলে এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানা গেছে। দীর্ঘ ৯ মাস চিকিৎসার পর এ মাসে মৃত্যু হয় ওই নারীর।
মারাত্মক অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তির আগে পুলিশের কাছে জবানবন্দিতে এ কথা বলে যান বিদ্যা নামের ওই নারী। তিনি দাবি করেন, তাঁর স্বামী বসবারাজকে এক ল্যাব টেকনিশিয়ান দম্পতি ক্লোরোফর্ম, সিরিঞ্জ ও পারদ সরবরাহ করেছিলেন। এসএলএন ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামে একটি ল্যাবে কাজ করতেন তাঁরা।
স্ত্রীর নাম শ্বেতা বলতে পারলেও স্বামীর নাম বলতে পারেননি বিদ্যা।
বিদ্যা পুলিশের কাছে জানান, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে ঘুমাতে যান তিনি। পরদিন সন্ধ্যায় ঘুম ভাঙে তাঁর। এরপরই ডান উরুতে তীব্র ব্যথা অনুভব করেন। তাঁর মনে হতে থাকে যে তাঁকে ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে। পা ফুলে গিয়ে হাঁটতে কষ্ট হচ্ছিল। অবস্থার অবনতি হলে তিনি ৭ মার্চ আত্তিবেলে সরকারি হাসপাতালে যান। সেখান থেকে তাঁকে অক্সফোর্ড হাসপাতালে পাঠানো হয়।
অক্সফোর্ড হাসপাতালের চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে বিদ্যার শরীরে পারদের বিষক্রিয়া শনাক্ত করেন। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠান চিকিৎসকেরা। পরীক্ষায় পারদের উপস্থিতি নিশ্চিত হয়।
বিদ্যা পুলিশের কাছে দাবি করেন, তাঁর স্বামীকে এ কাজে সহায়তা করেন তাঁর শ্বশুর মারিস্বামাচারী। তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যে শরীরে পারদের ইনজেকশন দেন।
মৃত্যুশয্যায় জবানবন্দিতে তিনি আরও জানান, স্বামী ও শ্বশুরের কাছ থেকে তিনি নিয়মিত হয়রানি, অপমান ও অবহেলার শিকার হতেন। তাঁর স্বামী তাঁকে ‘পাগল’ বলে সম্বোধন করতেন, ঘরে আটকে রাখতেন, আত্মীয়দের বাসায় যেতে দিতেন না। নিয়মিত নির্যাতন করতেন।
অক্সফোর্ড হাসপাতালে এক মাসের বেশি সময় চিকিৎসাধীন থাকার পর বিদ্যাকে ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা জানান, তাঁর পুরো শরীর বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত। কিডনিসহ একাধিক অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরে তাঁর ডায়ালাইসিস করা হয়। ৯ মাস চিকিৎসার পর তিনি মারা যান।
বিদ্যা ও বসবারাজ দম্পতির চার বছর বয়সী এক সন্তান রয়েছে।


