সব কিছু
facebook channelkhulna.tv
খুলনা মঙ্গলবার , ১০ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৩শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সূফি সাধনায় ফানা ও বাকা পরিচয় | চ্যানেল খুলনা

বিশ্বময় ইসলামের জাগরণ

সূফি সাধনায় ফানা ও বাকা পরিচয়

তাসাউফ হচ্ছে ধর্মের রূহ বা আত্মা। যেমনটা সূরা ইয়াছিনকে কোরাআনের ক্বালব বলা হয়েছে। ধর্মের দিল হলো ইলমে তাসাউফ। আর শরীয়ত হলো রূহের দেহ বিশেষ। তাসাউফের চর্চা হলো অন্তরের বিশুদ্ধতা অর্জনের চেষ্টা করা তথা আত্মাকে কুলুষমুক্ত করার চেষ্টায় ব্রত হওয়া। পরিপূর্ণভাবে আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণ করা। যেখানে নিজের কিংবা আমার বলে কিছুই থাকবে না। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে,‘বালা-মান আসলামা ওয়াজ্বহাহূ লিল্লা-হি ওয়া হুওয়া মূহসিনূন ফালাহূ আজ¦রুহু ইনদা রাব্বিহী, ওয়ালা খাওফূন আলাইহিম ওয়ালা-হুম ইয়াহ যানূন।’ অর্থাৎ ‘হ্যাঁ, যে আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণ করে তার প্রতিফল তার রবের নিকট রয়েছে এবং তাদের কোন ভয় নেই ও তারা দুঃখিত হবে না’। (সূরা বাকারা, আয়াত : ১১২)।
যারা সূফিবাদ চর্চা কিংবা সূফিদের অনুসরণ করেন তাদের জন্য ফানা ও বাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। ফানা হলো বান্দা আল্লাহর জাতে পাকের সিফাতে মিলনের আগ্রহে নিজের অন্তর আত্মাকে বিসর্জন দেয়া। বাকা হলো ¯্রষ্টার লাহুতের মকামে অবস্থান। অত্যন্ত সুক্ষ্ম জগত। উচ্চ স্তরের সূফিরাই শুধু ঐ মোকামে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছেন। হযরত মূসা (আঃ) আল্লাহর সাথে কথা বলতেন। কিন্তু আল্লাহকে চর্ম চক্ষু দিয়ে দেখতেন না। হরযত মূসা (আঃ) যখন আল্লাহর সাথে কথা বলতেন তখন আল্লাহ এবং হযরত মূসা (আঃ) উভয় পরস্পরের প্রতি ফানা থাকতেন। একদিন হযরত মূসা (আঃ) সরাসরি আল্লাহর সাথে কথা বলতে চেয়েছিলেন। কোহেতুর পাহাড়ে আল্লাহ সুবহানুতায়ালা সাক্ষাতের অনুমতি দিয়েছিলেন। আল্লাহর জালালীয়াতের সামান্য নূরের ফোটা বিচ্ছুরিত হওয়ার পূর্বেই হযরত মূসা (আঃ) জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলেন। হযরত ওয়াইস আল ক্বরনী (রা.)-এর নিকট ওহুদের যুদ্ধে হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দন্ত মোবারকের সংবাদ পৌঁছলে ওয়াইস ক্বরনী (রা.) একের পর এক বত্রিশটি দাঁত পাথর দিয়ে খুঁচিয়ে তুলে ফেলেছিলেন। হযরত মুনসূর হাল্লাজ (রা.) আল্লাহর জিকির করতে করতে ফানা হয়ে এক সময় তিনি বলতে লাগলেন আনাল হক। হযরত মুনসূর হাল্লাজ (রা.) আনাল হক বলার কারণে তাকে শূলে চড়িয়ে হত্যা করা হয়েছিল। তার দেহ পুড়িয়ে ছাই করে যখন নদীতে ফেলা হয়েছিল। তখন ছাই সাগরের পানিতে মেশার ফলে সাগরের পানি আনাল হক বলতে লাগল। অর্থাৎ মানুষ যখন আল্লাহর প্রেমে ফানা হয়ে পরশ পাথর হয়ে যায়। তখন ঐ পরশ পাথরের স্পর্শে যে আসবে সে তখন পরশ পাথর হয়ে যায়। ফানার মোকামের পরবর্তী স্তর হলো বাকার স্তর। আল্লাহর নূরকে প্রত্যক্ষ করার স্তর। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে,‘ ইয়া আইয়্যুহাল ইনসানূ ইন্নাকা কাদিহুন ইলা রাব্বিকা কাদহান ফামূলা-কীহ’। অর্থাৎ‘ হে মানুষ! তুমি (এক) কঠোর পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে তোমার সৃষ্টিকর্তার দিকে এগিয়ে যাচ্ছো, অতঃপর তুমি (সত্যি সত্যি) তাঁর সামনা সামনি হবে’। (সূরা ইনশিকাক, আয়াত:৬)।মানুষ যখন কঠিন সাধনার মধ্য দিয়ে আল্লাহর দীদারের আশায় সামনের দিকে এগুতে থাকে তখনই আল্লাহর সাক্ষাৎ পায়।
ফানা ও বাকার মোকাম অর্জনের সহজ উপায় হল দৈনন্দিন শরীয়তের আমলের পাশাপাশি ইলমে ত্বরিকতের জ্ঞান লাভ করা। শরীয়ত ব্যতিত ফানা ও বাকার অর্জন সম্ভব হয় না। ফানা ও বাকার মোকামের জন্য পাঞ্জেগানা আমলের পাশাপাশি দেহের অভ্যন্তরের দশটি লফিতাকে জিকিরের মাধ্যমে জাগ্রত করতে হয়। ¯্রষ্টার দীদার প্রত্যক্ষ করার জন্য নিজের মধ্যে এক ধরনের অনূভূতি তৈরি করে নিতে হয়। জিকিরের পরবর্তী সময় কেবলা মুখী হয়ে কিছুটা সময় ধ্যানে মগ্ন হতে হয়। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিঃসন্দেহে আসমানসমূহ ও যমীনের (নিখুঁত) সৃষ্টি এবং দিবা রাত্রির আবর্তনের মধ্যে জ্ঞানবান লোকদের জন্যে অনেক নিদর্শন রয়েছে। (এ জ্ঞানবান লোক হলো তারা) যারা দাঁড়িয়ে, বসে এবং শুয়ে সর্বাবস্থায় আল্লাহ পাককে মনে করে এবং আসমানসমূহ ও যমীনের এ সৃষ্টি (নৈপুণ্য) সর্ম্পকে চিন্তা গবেষণা করে (এবং স্বতষ্ফূর্তভাবে তারা বলে উঠে), হে আমাদের রব, (সৃষ্টি জগত)-এর কোনো কিছুই তুমি অযথা বানিয়ে রাখনি’।(সূরা আল ইমরান, আয়াত : ১৯০-১৯১)। কোরআনে ধ্যানকে তাফাক্কুর বলা হয়েছে। ধ্যানের মাধ্যমে সুক্ষ্ম জগতের জ্ঞান লাভ হয়। ধ্যান করলে মানুষ তার অতীতের কৃতকর্মের ফলাফল জানতে পারে। অতীতের অর্জিত কৃতকর্মের ফলই মানুষের মনে অনুশোচনা আক্ষেপ আহাজারি জাগিয়ে তুলে। অনুশোচনা আক্ষেপ থেকেই খালেস তওবা করার জন্য মানুষ প্রস্তুতি নেয়। আর মানুষ যখন আল্লাহর নিকট তওবা করে ক্ষমা পায় তখনই শুধু ফানা ও বাকার মোকাম অর্জন সম্ভব হয়। সূফিরা ফানা ও বাকার মোকামের পূর্বে তওবার মোকাম লাভের চেষ্টা করেন। নিজে নিজে আত্ম সমালোচনা করতে থাকে। সূফির তওবার মোকাম অর্জিত হওয়ার ফলে আনাল হকের পর্যায়ে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে। সূফিতত্ত্বে ফানা ও বাকার মূলনীতি হলো; তওবা, তাওয়াক্কুল, তাকওয়া, সবর, ইখলাছ, শোকর, রেজা, যুহদ, খওফ, ফকর, আদব, মহব্বত, মোরাকাবা, তাওহীদ, ইলম সর্ম্পকে জ্ঞান লাভ করা। সূফিদের মধ্যে যাদের আল্লাহ তায়ালার সুক্ষ্ম জগতের জ্ঞান থাকবে তারাই সূফিতত্ত্বের সর্বোচ্চ মোকাম ফানা ও বাকার স্তর অর্জন করতে সক্ষম হবেন।

লেখক-ফিরোজ আহমাদ

https://channelkhulna.tv/

সংবাদ প্রতিদিন আরও সংবাদ

‘দেশের মানুষের দারিদ্রের হার ১৮.৭০ শতাংশে নেমে এসেছে’

অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীর বিয়ের আয়োজন, মায়ের কারাদণ্ড

যুবককে কুপিয়ে ইজিবাইক ছিনতাই, ৩৬ ঘণ্টা পর উদ্ধার

কুষ্টিয়ায় রেস্তোরাঁয় ঢুকে ৩ জনকে ছুরিকাঘাত

জার্মানি সফর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন শুক্রবার

ঢাকার উদ্দেশে মিউনিখ ত্যাগ করবেন প্রধানমন্ত্রী

চ্যানেল খুলনা মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন  
DMCA.com Protection Status
উপদেষ্টা সম্পাদক: এস এম নুর হাসান জনি
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: শেখ মশিউর রহমান
It’s An Sister Concern of Channel Khulna Media
© ২০১৮ - ২০২২ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | চ্যানেল খুলনা.বাংলা, channelkhulna.com, channelkhulna.com.bd
যোগাযোগঃ কেডিএ এপ্রোচ রোড (টেক্সটাইল মিল মোড়), নিউ মার্কেট, খুলনা।
ঢাকা অফিসঃ ৬৬৪/এ, খিলগাও, ঢাকা-১২১৯।
ফোন- 09696-408030, 01704-408030, ই-মেইল: channelkhulnatv@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্তির জন্য আবেদিত।