রাজস্ব আহরণে আয়কর আইনজীবীদের সহযোগিতা কামনা করেছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। একই সঙ্গে করদাতার তথ্য গোপন করে সরকারকে অন্ধকারে না রাখারও আহ্বান জানান তিনি।
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে রাজস্ব ভবনে ট্যাক্স রিপ্রেজেনটেটিভ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (টিআরএমএস) সফটওয়্যারের উদ্বোধনীতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ আহ্বান জানান অর্থ উপদেষ্টা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান।
সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আপনারা ল ইয়ার, সরকারকে একটু অন্ধকারে রেখেন না। আপনারা একটু সহায়তা করেন। আপনাদের যে নিজস্ব স্বার্থ, আপনারা যদি এক্সপেডাইট করেন, ক্লায়েন্টকে যদি সার্ভিস দেন, ডেফিনেটলি ইনকামও কমার কথা না, তাই না? বরং ঘুরিয়ে অনেক দিন পরে টেবিলের নিচে দিয়ে টাকাপয়সা নিয়ে যাওয়ার চেয়ে যদি আপনি এফিশিয়েন্টলি সার্ভিস দিয়ে দেন, তখন কিন্তু খুব ডিফিকাল্ট হয় না। লোকজন তখন মাইন্ড করবে না। এই জিনিসটা একটু লক্ষ করবেন।’
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা বলছি না আপনারা একেবারে টাকাপয়সা না নিয়ে করে দেবেন, সেটা তো সম্ভব না। আপনারা ল ইয়ার, আপনারা চার্জ করতে পারবেন। যদি বেশি ভালো করে সার্ভিস দেয়, কেউ মানা করবে না।’
সফটওয়্যার সম্পর্কে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জিনিস আজকে উদ্বোধন করা হয়েছে দেশের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে। একটা মাইলস্টোন আমি বলব।’
সফটওয়্যার তৈরির সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা যখনই শুনি কিছু অ্যাপস ডেভেলপ করতে বাইরে থেকে নিয়ে আসল, বাইরে থেকে হায়ার করো—এই টেন্ডেন্সিটা আমাদের বেশি হয়ে গেছে। ডিপেন্ডেন্সি বেশি। ডিফেন্সি ব্যাপার আসলে অন্য ব্যাপার-স্যাপার আছে। আপনারা জানেন, বাইরে থেকে হায়ার করা মানেই টাকাপয়সা খরচ হবে।’
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, এই যে এই ধরনের প্রোগ্রাম, যেটা হলো, সবার জন্য মঙ্গলজনক। যে ট্যাক্স দেবে, ব্যক্তি পর্যায়ে হোক, কোম্পানি পর্যায়ে হোক, ব্যবসা-বাণিজ্য সব। দ্বিতীয়ত, যে কালেক্ট করবেন, তাঁদের জন্য সুবিধা। সরকার পক্ষে যাঁরা কালেক্ট করবেন, যাঁরা অফিসার আছেন, তাঁদের জন্য সুবিধা।
এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বলেন, ‘আগামী বছর থেকে আমরা করপোরেট ট্যাক্সও ইনশা আল্লাহ অনলাইন সাবমিশনে নিয়ে আসব। আমরা এই দুটোর জন্য, করপোরেট ট্যাক্স এবং ইনকাম ট্যাক্সের জন্য, ইভেন অ্যাপও তৈরি করে ফেলতে পারব। আপনারা যদি সহযোগিতা করেন, তাহলে ইনশা আল্লাহ আমরা যে স্বপ্ন দেখছি যে আপনার দৌড়াদৌড়ি কমে যাবে, তখন কিন্তু আপনারা আপনাদের মানে ট্যাক্স প্ল্যানিংয়ের জন্য বেশি ফোকাস করতে পারবেন ক্লায়েন্টদের জন্য। আপনি যখন ছোটাছুটিতে আপনার সব সময় নষ্ট হয়ে যায়, এখানে কিন্তু ছোটাছুটিতে কোনো সময় নষ্ট হবে না। আপনি ওয়ার্ক ফ্রম হোম করতে পারবেন। আপনার একদিনে যদি বলেন, ‘আমি ১০০ জন ক্লায়েন্টের রিটার্ন ঘরে বসে দেব। আজকে শরীর ভালো লাগছে না, মন ভালো লাগছে না। ঘর থেকে বের হতে ইচ্ছা করতেছে না। ঘরে বসে আপনি সব কাজ শেষ করে ফেলতে পারেন। এটা আপনাদের জন্য একটা বিরাট সুবিধা হবে এবং যেহেতু ক্যালকুলেশনে কোনো ভুল, এই কথা কেউ বলতে পারবে না’।