সাতক্ষীরার আয়ান খান রুহাব মাত্র আট মাস বয়সেই হয়েছেন বাংলাদেশের প্রথম কার্বন-নিরপেক্ষ শিশু। তার বাবা-মা তাদের সন্তানের জীবনের শুরুটা সবুজ ও পরিবেশবান্ধব করে তুলতে এই তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছেন, যা অন্যদেরও পরিবেশ রক্ষায় অনুপ্রাণিত করবে। রুহাবের বাবা ইমরান রাব্বী ‘গ্রীনম্যান’ সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা এবং মা আয়শা আক্তার ‘কিরণ’-এর সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করছেন। তাদের এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে সাতক্ষীরায় ৫৮০টি গাছ রোপণ করা হয়েছে—যা রুহাবের সারাজীবনের সম্ভাব্য কার্বন নিঃসরণ পূরণ করবে। ফলে রুহাবের জন্ম ও বেড়ে ওঠা হবে সম্পূর্ণ কার্বন-নিরপেক্ষ।
রুহাবের বাবা ইমরান রাব্বী তালা সদর ইউনিয়নের শিপপুর গ্রামের মোঃ রফিকুল ইসলামের ছেলে।
এই উদ্যোগকে স্বীকৃতি দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেইঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ICCCAD) এবং ঢাকা প্ল্যান্টার্স। গত রবিবার (১৯ অক্টোবর) ICCCAD আয়োজিত একটি পলিসি ডায়লগে এই উদ্যোগের স্বীকৃতিস্বরূপ রুহাবের পক্ষ থেকে সার্টিফিকেট গ্রহণ করেন ইমরান রাব্বী। সংগঠনটি এই প্রচেষ্টাকে বাংলাদেশের টেকসই ভবিষ্যতের এক অনুপ্রেরণামূলক উদাহরণ হিসেবে অভিহিত করেছে।
ইমরান রাব্বী বলেন, আমরা রুহাবের জন্য গাছ লাগিয়েছি, যেন সে পরিচ্ছন্ন বাতাসে ও সবুজ পরিবেশে বড় হতে পারে। এটি তার ভবিষ্যৎ ও পৃথিবীর জন্য আমাদের ছোট্ট একটি প্রচেষ্টা। সবাই রুহাবের জন্য দোয়া করবেন, যেন সে ভালোবাসা ও প্রকৃতির সঙ্গে বেড়ে ওঠে। রুহাবের দাদা মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, এমন একটি উদ্যোগ আসলে আমাদের সবার নেওয়া উচিত। আপনি শহর কিংবা গ্রাম যেখানেই থাকুন না কেন, আপনার নবজাতকের জন্য অন্তত একটি বৃক্ষ রোপণ করুন।
তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপা রাণী সরকার বলেন, এটি সত্যিই একটি অনন্য ও প্রশংসনীয় উদ্যোগ। একটি শিশুর জন্মকে পরিবেশবান্ধবভাবে উদযাপন করা শুধু সচেতনতার বার্তাই দেয় না, বরং সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তনের দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। রুহাবের বাবা-মা যে উদ্যোগ নিয়েছেন, তা অন্য অভিভাবকদেরও অনুপ্রাণিত করবে সবুজ ভবিষ্যৎ গড়তে।