বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেছেন, নতুন প্রজন্ম ছাত্র-জনতার ত্যাগ ও কুরবানির বিনিময়ে দেশের ১৮ কোটি মানুষ মুক্তি পেয়েছে। নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে ৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদ তৈরি করতে হবে। হাজার হাজার শহীদ ও পঙ্গু এবং আহতদের জন্য এখনো পর্যন্ত দেশ ও জাতি কিছু দিতে পারেনি। তাদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই বিজয় কোনো স্বৈরাচার ও মাফিয়া চক্র যাতে ছিনিয়ে নিতে না পারে সেজন্য সকলকে সচেতন ও ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। জাতিকে সুফল লাভ করতে হলে আগামী দিনে কুরআন ও সুন্নাহ’র আলোকে দেশকে গড়ে তুলতে হবে। তাহলেই জনগণের কাঙ্খিত সৎ ও যোগ্য দেশ প্রেমিক নেতৃত্ব গড়ে তুলতে হবে। তিনি অবিলম্বে জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদদের খুনী আওয়ামী লীগ ছাত্রলীগ যুবলীগ সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। মানুষের বাকস্বাধীতা ও মৌলিক মানবাধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। শহীদ আবু সাঈদ, সাকিব রায়হান, রাকিব, শান্ত, ফারুক হোসেন ও ওয়াসিম আকরামসহ সকল শহীদদের ত্যাগের চেতনায় জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদ তৈরি করতে হবে। ভোটের মর্যাদা ও দলের মর্যাদা রক্ষার জন্য পিআর পদ্ধতিতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিতে হবে বলে তিনি হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
শুক্রবার (৪ জুলাই) খুলনা মহানগরীর খালিশপুর অঞ্চল জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে নেছারিয়া কামিল মাদরাসায় জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের শহীদ ও হতাহতদের মাগফিরাতের জন্য দরিদ্র, অসহায়, দুস্থ ও ইয়াতিমদের মাঝে খাবার বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ সব কথা বলেন।
এ সময় খুলনা মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর সরকারী সেক্রেটারি এডভোকেট শাহ আলম, সহকারী সেক্রেটারি ও শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের খুলনা মহানগরী সভাপতি আজিজুল ইসলাম ফারাজী, কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক ইকবাল হোসেন, মাওলানা আবু বক্কার সিদ্দিক, খালিশপুর থানা আমীর মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মামুব, সেক্রেটারি আব্দুল আওয়াল, খালিশপুর থানা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য হেমায়েত উদ্দিন, আব্দুর রহীম, ৯ নং ওয়ার্ড আমীর কাজী বায়েজিদ ইসলাম, ১৩ নং ওয়ার্ড আমীর মানজারুল ইসলাম, মাদরাসা ওয়ার্ড সভাপতি তরিকুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। পরে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শহীদ, আহত ও পঙ্গুত্ববরণকারীদের স্মরণে বিশেষ দোয়া মোনাজাত করা হয়।
মহানগরী আমীর আরও বলেন, জুলাই বিপ্লব এ জাতির উপর আল্লাহর রহমত। আমরা জুলাই বিপ্লবে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। আহত ও পঙ্গুত্ববরণকারীদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি মহান আল্লাহর দরবারে। তিনি বলেন, আমরা আজ মুখ খুলে কথা বলতে পারছি। এটি জুলাই বিপ্লবের ফসল। বৈষম্যহীন সমাজ বিনির্মাণের যে উদ্দেশ্য নিয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থান সংঘঠিত হয়েছে তা এখনো অর্জিত হয়নি। বৈষম্যহীন সমাজ গঠনে জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন জাতি অনন্তকাল স্মরণ করবে ইনশাআল্লাহ। তিনি বলেন, যারা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের হাত থেকে জাতিকে মুক্ত করতে গিয়ে আহত-পঙ্গুত্ব বরণ করেছে তারা ইসলামের দৃষ্টিতে গাজী এবং গণহত্যার শিকার সবাই শহীদ। তিনি বলেন, আমাদের শহীদেরা যেই স্বপ্ন দেখেছে, একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গঠন ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা। সেই স্বপ্নের বীজ জামায়াত তার প্রতিষ্ঠাকালেই বুনেছে। জামায়াত দীর্ঘকাল ধরে সেই আন্দোলনই করে আসছে। তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামীর আন্দোলন সঠিক ছিল এদেশের ছাত্র-জনতা ২০২৪-এ বুঝতে পেরেছে। এ জন্য তারা জীবনের মায়া ত্যাগ করে দেশকে ভালোবেসে ফ্যাসিবাদের হাত থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করেছে। শহীদদের স্বপ্ন পূরণে জামায়াতে ইসলামী আগামীতেও কাজ করবে। তিনি উপস্থিত সকলকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা- সার্বভৌমত্ব রক্ষায় রাজপথে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।