সব কিছু
facebook channelkhulna.tv
খুলনা বুধবার , ১৩ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২৯শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
মুফতি মুহিব্বুল্লাহ অপহরণের নাটক নিজেই সাজিয়েছেন: পুলিশ | চ্যানেল খুলনা

মুফতি মুহিব্বুল্লাহ অপহরণের নাটক নিজেই সাজিয়েছেন: পুলিশ

‎গাজীপুরের টঙ্গীর টিঅ্যান্ডটি কলোনি জামে মসজিদের খতিব মুফতি মুহিব্বুল্লাহ মিয়াজী (৬০) অপহরণের নাটক সাজানোর কথা স্বীকার করেছেন। পঞ্চগড় থেকে উদ্ধার হওয়ার পর গাজীপুর মহানগর পুলিশের (জিএমপি) টঙ্গী থানায় অপহরণের মামলা করেন মুহিব্বুল্লাহ মিয়াজী। তদন্তে নেমে পুলিশ অপহরণের রহস্য উদ্‌ঘাটন করে। তখন পুলিশের কাছে এবং ফেসবুক লাইভে স্বীকার মুহিব্বুল্লাহ মিয়াজী জানান, তিনি নিজেই পঞ্চগড়ে গিয়েছিলেন।

মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে জিএমপি সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান জিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) তাহেরুল হক চৌহান। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘মুফতি মুহিব্বুল্লাহ নিজেই টঙ্গী থানায় এসে নিজের অপহরণের কথা জানিয়েছেন। তিনি (মুহিব্বুল্লাহ মিয়াজী) বলেন, “আমি শারীরিকভাবে একটু অসুস্থ, আমাকে একটু সময় দিন।” পুলিশ তাকে সময় দিয়েছে। পরে বিকেলে তিনি থানায় এসে নিজে বাদী হয়ে একটি অপহরণের মামলা দায়ের করেন।’

এজাহারে তিনি দাবি করেছিলেন, গত ২২ অক্টোবর সকাল ৭টার দিকে টঙ্গীর শিলমুন এক্সিস লিংক সিএনজি ফিলিং অ্যান্ড কনভার্সন সেন্টারের সামনে থেকে তাকে অপহরণ করে একটি অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হয়। পরে তিনি নিজেই টঙ্গী থানায় উপস্থিত হয়ে, “পঞ্চগড় থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার হওয়ার কথাও জানান।” এ ঘটনার পর বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়।’

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আরও জানান, টঙ্গী পূর্ব থানাধীন মরকুন টিঅ্যান্ডটি বাজার জামে মসজিদের খতিব মুফতি মুহিব্বুল্লাহ মিয়াজী অপহৃত হয়েছেন এ মর্মে ২৪ অক্টোবর মামলা রেকর্ড করা হয়। এজাহারের বক্তব্য অনুযায়ী জানা যায়, গত ২২ অক্টোবর সকাল ৭টায় খতিব মুফতি মুহিব্বুল্লাহ মিয়াজী মর্নিংওয়াকে বের হন। বাসার খুব কাছে টঙ্গী পূর্ব থানাধীন শিলমুন সাকিনস্থ এক্সিস লিংক সিএনজি ফিলিং অ্যান্ড কনভারশন সেন্টারের সামনে টঙ্গী-কালীগঞ্জগামী আঞ্চলিক সড়কে একটি অ্যাম্বুলেন্স তার পথরোধ করে এবং হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ করে অজ্ঞাতপরিচয় ৪-৫ জন ব্যক্তি। জোরপূর্বক অ্যাম্বুলেন্সে উঠিয়ে সঙ্গে সঙ্গে কালো কাপড়ে চোখ বেঁধে নির্যাতন করা হয়। এবং অ্যাম্বুলেন্স বিরতিহীনভাবে চলতে থাকে। এভাবে অ্যাম্বুলেন্সে থেমে থেমে অপহরণকারীরা তাকে শারীরিক নির্যাতন করে। প্রায় একদিন একরাত অ্যাম্বুলেন্স চলার পর তাকে প্রাণনাশের উদ্দেশ্যে কাঁচের বোতল দিয়ে তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মারাত্মকভাবে আঘাত করা হয় ও দাড়ি কেটে দেওয়া হয়। একপর্যায়ে তাকে অ্যাম্বুলেন্স থেকে নামিয়ে অজ্ঞাতস্থানে ৪-৫ জন তার জামা-কাপড় খুলে নেয়। এ সময় ভোরের আলো ফুটতে থাকলে মানুষের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা চলে যায়, তবে যাওয়ার আগে শিকল দিয়ে খতিবের বাম পা রাস্তার পাশের একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে ফেলে। এমনিকে অপহরণকারীরা খতিবের একটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। পরবর্তীতে সড়কে চলাচল করা মানুষজন এসে বাদীকে উদ্ধার করেন এবং জানতে পারেন যে, এটি পঞ্চগড় জেলা। পরে স্থানীয়রা জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করে পঞ্চগড় সদর থানা-পুলিশকে জানান। পুলিশ তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য পঞ্চগড় সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে টঙ্গী পূর্ব থানা-পুলিশের সহায়তায় তিনি পঞ্চগড় থেকে বর্তমান ঠিকানায় আসেন।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানায়, মামলার তদন্তকারী টিম টিঅ্যান্ডটি কলোনিস্থ বাদীর বাসা থেকে ঘটনাস্থল পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা নেয়। তদন্তকালে দেখা যায়, বাসা থেকে বের হয়ে একা হেঁটে নিমতলী সিএনজি পাম্প পার হয়ে পূবাইল থানাধীন মাজুখান ১৪ তলা হয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যান ওই খতিব। বাদী এজাহারে উল্লেখ করা ৪-৫ জন ব্যক্তি তাকে অ্যাম্বুলেন্স তুলে নিয়ে যাওয়ার কথা বললেও ৩ ঘণ্টার মধ্যে কোনো অ্যাম্বুলেন্স চলাচলের বিষয়টি সিসি ক্যামেরায় দেখা যায়নি। ২২ অক্টোবর সাড়ে ১১টার সময় ভুক্তভোগীর অবস্থান ঢাকা মহানগরের সোবাহানবাগ এলাকা সংলগ্ন প্লাজা এ.আর এর পাশে অবস্থান দেখা গেছে। এরপর তিনি ঢাকার শ্যামলী কাউন্টার থেকে দুপুর ২টার সময় পঞ্চগড়গামী শ্যামলী পরিবহনের বাসে টিকেট কেনেন। এবং বাসে চড়েন। যাত্রাপথে মুফতি মুহিব্বুল্লাহর বাস বগুড়া জেলার শেরপুর থানাধীন পেন্টাগন হোটেলে যাত্রাবিরতি করে। সেখানে তিনি বাস থেকে নেমে হোটেলে নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে দ্রুত বাসে উঠেন। পেন্টাগন হোটেলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে এর প্রমাণ পাওয়া গেছে।

জিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) তাহেরুল হক চৌহান আরও বলেন, ‘উদ্ধারের পর সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও বাসযাত্রার বিষয়ে মুফতি মুহিব্বুল্লাহ পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, “আমি হাঁটতে গেছি। হাঁটতে যাওয়ার পরে আমার মাথায় এলো যে আমি চলতে থাকি, যাই। কোন দিকে যাই, বলতে পারি না। একপর্যায়ে আমি অটোতে উঠছি, মীরের বাজার নামছি। নামার পরে মন চাইল যে, আমি জয়দেবপুর যাই। সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে জয়দেবপুর গেছি। এরপরে আমার মাথায় এলো যে, আমি এখন এই বাসে উঠি। ‎বাসে উঠে শ্যামলী না কোন যায়গায় যেন নামছি। সেখান থেকে আমি আরেকটা বাসে উঠে গাবতলি গেছি। ওইখান থেকে আমি মন চাইল যে, আমি টিকিট কিনি। কই যাব, খেয়াল হইল যে, আমি পঞ্চগড় যাই। ‎অনেক রাতে পঞ্চগড় নামছি। নামার পরে হাঁটতেছিলাম, কোন দিকে হাঁটতেছিলাম আমি জানি না, চিনি না, হাঁটতেছিলাম। একপর্যায়ে আমি দেখি যে, পঞ্চগড় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, পুলিশ লাইনস। এগুলো হেঁটে পার হয়ে গেছি। পার হয়ে গিয়ে আমি একটা শিকল কুড়িয়ে পাইলাম। ওইটা নিয়ে আমি এক জায়গায় প্রস্রাব করতে বসলাম। প্রস্রাব করলাম আর পায়জামায় প্রস্রাব লাগল, এর পরে জামায়ও লাগল। জামা খুইলা ফালাইলাম, পায়জামাও খুললাম। কিন্তু খোলার পরে আবার পরতে হবে এই জিনিসটা আমি আর পারিনি ঠাণ্ডায়। ঠাণ্ডায় ওইখানে শুইয়া পড়লাম আর পায়ে শিকল দিলাম। এইটা কেন করেছি, এটার কোনো চিন্তাভাবনা আমার নেই।’

https://channelkhulna.tv/

সারাদেশ আরও সংবাদ

১৫ পুলিশ হত্যা মামলায় কারাবন্দী আ.লীগ নেতার মৃত্যু

‘বেঁচে থেকে লাভ কি যদি আল্লাহ’র ইবাদতই না করি’ স্ট্যাটাস দিয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

মুফতি মুহিব্বুল্লাহ অপহরণের নাটক নিজেই সাজিয়েছেন: পুলিশ

বন্ধুদের নিয়ে স্ত্রীকে আনতে গিয়ে ধাওয়া খেলেন যুবক, ‘ডাকাত সন্দেহে’ পিটুনি

বরিশালে গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণের দায়ে ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড

উখিয়ায় নিখোঁজের ১৯ ঘণ্টা পর স্কুলছাত্রের লাশ উদ্ধার

চ্যানেল খুলনা মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন  
সম্পাদক: মো. হাসানুর রহমান তানজির
It’s An Sister Concern of Channel Khulna Media
© ২০১৮ - ২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | চ্যানেল খুলনা.বাংলা, channelkhulna.com.bd
যোগাযোগঃ ৫ কেডিএ বানিজ্যিক এলাকা, আপার যশোর রোড, খুলনা।
প্রধান কার্যালয়ঃ ৫২/১, রোড- ২১৭, খালিশপুর, খুলনা।
ফোন- 09696-408030, 01704-408030, ই-মেইল: channelkhulnatv@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য অধিদফতরে অনলাইন নিউজ পোর্টাল নিবন্ধনের জন্য আবেদিত।