ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ শামছুল আলম বলেছেন, মাদরাসা শিক্ষার্থীদের দায়িত্বশীলতার সাথে সমাজ বদলের কাজে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি আরও বলেন, মাদরাসা শিক্ষা নিয়ে অতীতে নেতিবাচক মনোভাব প্রচারের অপচেষ্টা চালানো হয়েছে। অথচ মাদরাসা শিক্ষার্থীরাই দেশের বিভিন্ন অঙ্গনে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছে। অবমূল্যায়ন ও বৈষম্যের দিন শেষ, আগামীর নতুন বাংলাদেশ হবে মেধাবীদের মূল্যায়নের দেশ। তিনি পরিপূর্ণ ইসলামী সমাজ গড়তে মাদরাসা শিক্ষার্থীদের ভ‚মিকা পালনের আহবান জানান।
তিনি সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙ্গাস্থ তা’লীমুল মিল্লাত রহমাতিয়া কামিল মাদরাসার কামিল(¯œাতকোত্তর) শ্রেণীর সবক অনুষ্ঠান ও কৃতিছাত্র সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের কামিল(স্নাতকোত্তর) বিভাগের ডীন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ অলীউল্যাহ, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(শিক্ষা ও আইসিটি) নুরুল হাই মোহাম্মদ আনাছ এবং ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ জিয়াউর রহমান।
মাদরাসার অধ্যক্ষ আবুল ফাত্তাহ মোঃ নাজমুছ ছউদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে কামিল (স্নাতকোত্তর) শ্রেণির সবক প্রদান ও নছীহা পেশ করেন খুলনা জেলা ইমাম পরিষদের সভাপতি আলহাজ্ব অধ্যক্ষ মুহাম্মদ সালেহ। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন, মাদরাসার গভর্নিং বডির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আলহাজ্ব এমদাদুল হক খালাসী এবং দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন, মাদরাসা গভর্ণিং বডির বিদ্যোৎসাহী সদস্য এবং তা’লীমুল মিল্লাত রহমাতিয়া জামে মসজিদের খতীব অধ্যাপক মাওলানা আ ন ম আব্দুল কুদ্দুস।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন, দারুল কুরআন সিদ্দিকীয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা ইদ্রিস আলী, রংপুরের মুলাটল মদিনাতুল উলুম কামিল
মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোঃ আসগর আলী, আমতলী কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ
মাওলানা বায়েজীদ হোসেন, সোনাতুনিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা এসএম আব্দুল আজিজ, গোবিন্দপুর ফাযিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুছ আলী, শরাফপুর ফাযিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা অলীউর রহমান, তা’লীমুল মিল্লাত এ্যালামনাই এসোসিয়েশনের সভাপতি মাওলানা নিয়াজ মাখদুম, রায়ের মহল কলেজের শিক্ষক ও মাদরাসা গভর্নিং বডির সদস্য মাওলানা জাফর সাদিক।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি আরও বলেন, শুধু কামিল পাশ বা মাওলানা হলেই ভালো মানুষ হওয়া যায়না। মানুষ হতে হলে ওহির জ্ঞান অর্জন করতে হবে। যেটি মাদরাসা শিক্ষার্থীদের দ্বারা সম্ভব। এজন্য তিনি শিক্ষকদেরও দায়িত্বশীল ও যতœবান হওয়ার আহবান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডীন প্রফেসর ড. অলিউল্যাহ বলেন, ইমাম থেকে রাষ্ট্রনায়ক পর্যন্ত সর্বত্রই মাদরাসা শিক্ষার্থীদের ভ‚মিকা রাখতে হবে। দুর্নীতিমুক্ত, সৎ মানুষ এবং স্বচ্ছ প্রশাসক গঠনে মাদরাসা শিক্ষার কোন বিকল্প নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিগত দিনে মাদরাসা শিক্ষার্থীদের দমিয়ে রাখা হয়েছিল। আজ সর্বক্ষেত্রে প্রমাণিত হয়েছে যে, কেবলমাত্র মাদরাসা শিক্ষাই পারে সমাজের সকল অপরাধ দূর করতে। এটি মাদরাসা শিক্ষার্থীদের ধরে রাখতে হবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, থানা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আবদুল মমিন, খুলনার নেছারিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুর রহমান, খুলনা আলিয়া কামিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ড. মুফতি আব্দুর রহীম, বাগেরহাটের মাধবকাঠি ফাযিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মশিউর রহমান, কয়রার কালনা কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুছ আলী, খান এ সবুর মহিলা মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সালেহ আহমাদ, আল হেরা ফাযিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা নূরুল ইসলাম, চালনা বিলালিয়া আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা অজিহুর রহমান, মাওলানা আজিজুর রহমান সিদ্দিকী, মাওলানা মাসুম বিল্লাহ, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, মাওলানা মোঃ আমিরুল ইসলাম, মাওলানা ইব্রাহীম ফয়জুল্লাহ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শেখ আসাদুর রহমান।
অনুষ্ঠানে মাদরাসা থেকে চলতি (২০২৫) বছরের দাখিল (এসএসসি) পরীক্ষায় কৃতিত্ব অর্জনকারী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ও ক্রেষ্ট দেওয়া হয়। পরে প্রধান অতিথি মাদরাসা অভ্যন্তরে বৃক্ষরোপন ও পুকুরে মৎস্য অবমুক্ত করেন।
এসময় তিনি মাদরাসার সুবিশাল ক্যাম্পাস ঘুরে দেখেন। বিশেষ করে মাদরাসার আধুনিক লাইব্রেরিসহ অন্যান্য স্থাপনা দেখে মুগ্ধ হন। তবে আবাসিক সংকট দূর করার জন্য আরও ভবন নির্মাণ প্রয়োজন বলে তিনি তাগিদ দেন। তাছাড়া মাাদরাসার কারিগরি শাখার ব্যাপারেও তিনি জোর দেন।