
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে এক বছরের মধ্যে এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং দেশের অর্থনীতিকে এক ট্রিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার অঙ্গীকার করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক ও খুলনা-৪ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী আজিজুল বারী হেলাল।
বুধবার (১২ নভেম্বর) বিকেলে দিঘলিয়ার সেনহাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত নির্বাচনী সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন দিঘলিয়া থানা বিএনপির সভাপতি সাইফুর রহমান মিন্টু মোল্লা এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক রকিব মল্লিক। আজিজুল বারী হেলাল বলেন, “আমরা কাল্পনিক কোনো দিঘলিয়া নয়, প্রকৃত একটি দিঘলিয়া গড়তে চাই, যেখানে মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি নিশ্চিত হবে। তিনি জানান, বিএনপি সরকার গঠন করলে স্টার জুটমিলসহ বন্ধ হয়ে যাওয়া শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো পুনরায় চালু করা হবে, যাতে স্থানীয় অর্থনীতি পুনরুজ্জীবিত হয়। “স্টার জুটমিল বন্ধ হওয়ার পর দিঘলিয়া যেন মৃত এলাকায় পরিণত হয়েছে। আমরা ক্ষমতায় গেলে এসব মিল পুনরায় চালু করে মানুষের কর্মসংস্থান ফিরিয়ে দেব,” বলেন হেলাল। তিনি আরও বলেন, বিএনপি শুধু নির্বাচনের সময় নয়, সারা বছর মানুষের পাশে থাকতে চায়। “প্রতিটি পরিবারকে একটি করে ফলজ গাছ উপহার দেওয়া হবে—যা পুষ্টি চাহিদা মেটাবে এবং অতিরিক্ত ফল বিক্রি করে পরিবারের আর্থিক সচ্ছলতা আনবে।”
বিএনপি সরকারের পরিকল্পনা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমরা ‘ফ্যামিলি কার্ড’, ‘কৃষি কার্ড’ এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে ‘হেলথ কেয়ার ইউনিট’ চালু করবো, যেখানে সাধারণ মানুষ বিনামূল্যে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা পাবে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের সমালোচনায় হেলাল বলেন, “গণ-অভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগ রাজনীতি থেকে পালিয়েছে, তারা এখন একটি পলাতক দলে পরিণত হয়েছে। তবে বিএনপি কোনো দল নিষিদ্ধ করার পক্ষে নয়। যারা গুম, খুন, নির্যাতনে জড়িত, তাদের বিচার হবে, কিন্তু কলমের খোঁচায় কোনো দল নিষিদ্ধ করা গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি নয়।
জামায়াতে ইসলামীর অবস্থান প্রসঙ্গে তিনি বলেন,জামায়াত একদিকে বলে নির্বাচন হবে না, অন্যদিকে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেয়। তারা আওয়ামী লীগের তৈরি করা রাজনৈতিক শূন্যস্থান দখলের চেষ্টা করছে এবং ধর্মকে ক্ষুদ্র রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করছে। দলীয় নেতাকর্মীদের আধুনিক প্রচারণার আহ্বান জানিয়ে হেলাল বলেন, “পৃথিবী এখন দুই জগতে বিভক্ত—অ্যাকচুয়াল জগৎ ও ভার্চুয়াল জগৎ। শুধু মাঠে নামলেই হবে না, ফেসবুক, ইউটিউবসহ ভার্চুয়াল জগতে দলের বক্তব্য ছড়িয়ে দিতে হবে, কারণ এখন মানুষ পত্রিকার চেয়ে মোবাইল বেশি দেখে।”
তিনি আরও যোগ করেন, “দিঘলিয়া একসময় ছিল শিল্পনগরী, এখন মৃতপ্রায় এলাকা। বিএনপি সরকার গঠন করলে এই অঞ্চলকে আবারও শিল্পাঞ্চলে পরিণত করা হবে। আমরা রেশন কার্ড, ফ্যামিলি কার্ড, স্বাস্থ্য ইউনিট ও নদী সংযোগে ব্রিজ নির্মাণ করবো।” সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক খান জুলফিকার আলি জুলু, শেখ আব্দুর রশিদ, এনামুল হক সজল, নাজমুস সাকিব পিন্টু, আরিফুল ইসলাম আরিফ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আতাউর রহমান রনু, বাবু উজ্জ্বল কুমার সাহা, রকিব মল্লিক, মোজ্জামেল শরিফসহ স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এর আগে সকালে আজিজুল বারী হেলাল দিঘলিয়ার পথের বাজারে দোকানদারদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং “একটি বাড়ি, একটি গাছ” কর্মসূচির অংশ হিসেবে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বৃক্ষরোপণ করেন। তিনি পথেরবাজার মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ফাতেমা মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সেনহাটি বালিকা বিদ্যালয় ও সরোয়ার খান ডিগ্রি কলেজে বৃক্ষরোপণ ও মতবিনিময় সভায় অংশ নেন।


