টানা দুই দিনের দুর্নীতিবিরোধী সহিংস প্রাণঘাতী বিক্ষোভের পর নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি পদত্যাগ করেছেন। দেশটির রাজধানী কাঠমান্ডুতে ছড়িয়ে পড়া এই বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত ১৯ জন নিহত হয়েছেন। ‘জেন-জি আন্দোলন’ নামে পরিচিত এই আন্দোলনের মূল দাবি ছিল অলির পদত্যাগ। সেই দাবি মেনে পার্লামেন্ট ভবনে অগ্নিসংযোগের কয়েক ঘণ্টা পর প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের ঘোষণা এল। খবর কাঠমান্ডু পোস্টের।
বিক্ষোভকারীরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ ও রাজনৈতিক সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। সহিংসতা দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী টিয়ার গ্যাস ও গুলি চালালে হতাহতের ঘটনা ঘটে।
এর আগে, সরকারের দুর্নীতি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে নেপালি তরুণদের আন্দোলন গড়ায় দ্বিতীয় দিনে। গতকাল সোমবার আন্দোলনের প্রথম দিনে পুলিশের গুলিতে ১৯ জন নিহত হয়। সেদিনই জারি করা হয় কারফিউ। তবে, আজ মঙ্গলবার তরুণেরা কারফিউ উপেক্ষা করে বিক্ষোভ করছেন। এমনকি তারা দেশটির বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করছেন।
কাঠমান্ডু পোস্টের খবরে বলা হয়, আজ মঙ্গলবার রাজধানী কাঠমান্ডু ও বিভিন্ন জেলায় রাজনৈতিক নেতা ও মন্ত্রীদের বাসভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান জেনারেশন জেডের তরুণেরা। তাঁরা নেতাদের বাসায় ইটপাটকেল ছোড়েন এবং অগ্নিসংযোগ করেন।
ললিতপুরে যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী প্রত্যুষ সুব্বা গুরুংয়ের বাড়িতে আগুন লাগান বিক্ষোভকারীরা। পাশাপাশি উপপ্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী বিষ্ণু পাউডেলের ভৈসেপাতির বাসভবনে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। গত সোমবার পদত্যাগ করা সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখকের বাসভবনেও হামলা চালানো হয়।
ভৈসেপাতিতে অবস্থিত নেপাল রাষ্ট্র ব্যাংকের গভর্নর বিশ্ব পাউডেলের বাসভবনেও হামলা হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা বুড়ানিলকণ্ঠায় অবস্থিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও নেপালি কংগ্রেস সভাপতি শেরবাহাদুর দেউবার বাসার সামনে পৌঁছালেও নিরাপত্তা বাহিনী তাঁদের আটকায়।
এ ছাড়া বিরোধী দল সিপিএনের (মাওইস্ট সেন্টার) চেয়ারম্যান পুষ্পকমল দহলের খুমালতার বাসভবনেও ইটপাটকেল ছোড়ে বিক্ষোভকারীরা। স্থানীয় সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, প্রশাসন কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া সত্ত্বেও বিভিন্ন জেলায় মুখ্যমন্ত্রী, প্রাদেশিক মন্ত্রী ও অন্য নেতাদের বাসভবন লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা।