খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি এড. শফিকুল আলম মনা বলেছেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা বিরোধী আন্দোলন সংগ্রামে অংশগ্রহন না করে যারা দলের সাথে বেঈমানী করেছে, বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, সেই সকল মীরজাফরদের বিষয়ে দলের নেতাকর্মীদের এখনই সতর্ক হতে হবে। ওইসব ষড়যন্ত্রকারী ব্যক্তিরা দলীয় কর্মকাণ্ডের বাইরে থেকে নিজেদের “আমিত্ব” ও ব্যক্তিগত প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে। অথচ বিএনপি ব্যক্তিকেন্দ্রিক নয়-এটি একটি আদর্শিক রাজনৈতিক সংগঠন, যার শেকড় রাজপথে ও সাধারণ মানুষের হৃদয়ে। তিনি বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশ উপেক্ষা করে কিছু ব্যক্তিরা নিজস্ব বলয় গড়ে তোলার চেষ্টা করেছেন, যা দলের শৃঙ্খলা ও ঐক্যের পরিপন্থী। তিনি স্পষ্টভাবে বলেন-যারা দলের আদর্শ ও নেতৃত্বের প্রতি অবিচল নয়, তারা বিএনপির কেউ হতে পারে না।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) বিকাল ৪টায় রুপসা বাসস্ট্যান্ড থেকে শুরু হওয়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রদত্ত রাষ্ট্র মেরামতে ৩১দফার লিফলেট বিতরণ ও ধানের শীষের পক্ষে প্রচার মিছিল বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিন শেষে হাজী মহসিন রোডস্থ চার রাস্তার মোড়ে অনুষ্ঠিত পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন। মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন বলেন, বিএনপি সবসময় জনগণের দল-এখানে নেতৃত্ব রাজপথের লড়াই-সংগ্রাম থেকে উঠে আসে, কোনো প্রভাবশালী গোষ্ঠী বা ব্যক্তিস্বার্থের হাত ধরে নয়। অতীতে যারা দলের কঠিন সময়ে পাশে ছিল না, আন্দোলনের মাঠে অনুপস্থিত ছিল, তারা আজ বিভিন্নভাবে নিজেদের পুনঃপ্রতিষ্ঠার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এসব সুযোগসন্ধানী ও বিশ্বাসঘাতকদের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে। দলীয় ঐক্য ও শৃঙ্খলার প্রশ্নে বিএনপি কোনো ছাড় দেবে না। দলের সিদ্ধান্তই সর্বোচ্চ নির্দেশ-সেটি উপেক্ষা করা মানে দলীয় আদর্শ থেকে বিচ্যুত হওয়া।
তিনি বলেন, যারা ওয়ান ইলেভেনের সময় জিয়া পরিবারের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, যারা আন্দোলনের নামে চাঁদাবাজি ও নেতাকর্মীদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে, সেইসব আন্দোলনবিমুখ নেতাদের বিএনপিতে কোনো স্থান হবে না। ১৭ বছরের দুঃশাসন ও স্বৈরশাসনামলে ইতিহাসের বর্বরোচিত নির্যাতন-নিপীড়ন, হত্যা, গুম, হামলা-মামলা, গ্রেফতার-কারাবন্দীর শিকার হয়েছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। দলটির প্রধান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া, বড় ছেলে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোসহ কেন্দ্রের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ থেকে ওয়ার্ডের কর্মী-সমর্থকরাও এ থেকে বাদ যাননি। অবর্ণনীয় এসব নির্যাতনের শিকার হয়েও দীর্ঘ এই সময় ধরেই বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ রয়েছেন নেতাকর্মীরা। লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের। শুধু বিএনপি করার কারণে ঘর-বাড়ী ছাড়তে হয়েছেন অনেকে, হারিয়েছে ব্যবসা-বাণিজ্য-চাকরিও। দল ত্যাগ করলেই অর্থ-সুন্দর জীবনের প্রলোভন থাকলেও তারা খেয়ে না খেয়ে রাত্রি যাপন করেছেন ক্ষেতে-খামারে। কিন্তু তারপরও দলের শীর্ষ নেতাদের প্রতি আনুগত্য ও আদর্শের প্রতি ছিলেন অবিচল। তাদের এই দুর্দমনীয় বিশ্বাস ও অঙ্গীকারের কারণে স্বৈরাচার আওয়ামী সরকার দেড় দশকে বহুবার বিএনপিকে ভাঙার চেষ্টা করলেও সফল হইতে পারেনি। তুহিন বলেন, দলের দুঃসময়ে নিষ্ক্রিয় থাকা, পদত্যাগ করা, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ, সিদ্ধান্ত অমান্য করা, নীতিবিরোধী কাজের সাথে জড়িতরা দলে ফিরতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। দলের দুঃসময়ে যারা নিরাপদ দূরত্বে থেকেছে, নিজেদের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়েছে তাদের বিষয়ে সর্তক থাকতে হবে। তাদেরকে কোনভাবেই প্রশ্রয় দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন।
কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন খুলনা মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদ পারভেজ বাবু, চৌধুরী হাসানুর রশিদ মিরাজসহ থানা, ওয়ার্ড বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষক দল, জাসাস, মহিলা দল, তাঁতীদল ও ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
আজকের কর্মসুচি: আজ শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) মহানগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে লফলেট বিতরণ ও ধানের শীষের পক্ষে প্রচার মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।