সব কিছু
facebook channelkhulna.tv
খুলনা শনিবার , ২৮শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ১৩ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
থ্রি ডক্টরসের তারিমের ব্যাংকে ২৫ কোটি টাকার লেনদেন | চ্যানেল খুলনা

মেডিক্যালের ভর্তি জালিয়াত চক্রে দুই ব্যাংকারের যোগসূত্র, চাকরি গেল একজনের

থ্রি ডক্টরসের তারিমের ব্যাংকে ২৫ কোটি টাকার লেনদেন

ডাক্তার ইউনুসুজ্জামান খান তারিম খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার। খুলনা শহরেরই একটি বেসরকারি হাসপাতালের অংশীদারি মালিক তিনি। তবে আলোচিত মেডিক্যাল ভর্তির কোচিং সেন্টার ‘থ্রি ডক্টরস’-এর পরিচালক হিসেবেই তাঁর ব্যাপক পরিচিতি। কোচিং সেন্টারের পোস্টারে তাঁর নাম আর ছবির নিচে লেখা হয়—‘ডাক্তার বানানোর কারিগর’। দেড় যুগে তাঁর কোচিং সেন্টারের প্রায় চার হাজার শিক্ষার্থী মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হতে পেরেছেন। মাঝে ভর্তি জালিয়াতির সঙ্গে থ্রি ডক্টরস কোচিং সেন্টারের নাম এলেও তারিম আছেন বহাল। অবশেষে এই ডাক্তার বানানোর কারিগরের গোমর ফাঁস হতে যাচ্ছে। মেডিক্যালে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে জালিয়াতচক্রের সঙ্গে ডা. তারিমের সম্পৃক্ততা পেয়েছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, তারিমের ৩৫টি ব্যাংক হিসাবে প্রায় ২৫ কোটি টাকার লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। তাঁর ব্যাংক হিসাবগুলো ফ্রিজ করে তদন্ত করা হচ্ছে। ডা. তারিম এবং তাঁর স্ত্রী ডা. যূথীর নামে জমি, ফ্ল্যাট ও শেয়ারসহ প্রায় ১৫ কোটি টাকা মূল্যের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের খোঁজও মিলেছে। সম্প্রতি ডা. তারিমকে ঢাকায় সিআইডি কার্যালয়ে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিআইডির তদন্তদল। স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোর প্রেস থেকে প্রশ্ন ফাঁসচক্রের হোতা জসিমউদ্দিন ভুইয়া মুন্নু, মেশিনম্যান আব্দুস সালামসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তারের পর আর্থিক অনুসন্ধানে কোচিং সেন্টারসহ অনেকের সংশ্লিষ্টতা বেরিয়ে আসছে। ধানমণ্ডি থানার মানি লন্ডারিং মামলাটি তদন্ত করছে সিআইডির অর্গানাইজ ক্রাইম ইউনিট।

তবে ডা. তারিম প্রশ্ন ফাঁসচক্রের সঙ্গে জড়িত নয় বলে দাবি করে বলেছেন, তাঁর নাম কোথাও নেই। আগে অভিযোগ উঠলে তা প্রমাণ হয়নি। তাঁর সব আয় বৈধ আয়করের আওতাধীন বলেও দাবি করেন ডা. তারিম।

অন্যদিকে প্রশ্নপত্র ফাঁসচক্রে দুই ব্যাংক কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতাও পেয়েছে সিআইডি। সম্প্রতি তাঁদের সিআইডি কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। আলোচিত ওই দুই ব্যাংক কর্মকর্তার নাম আতিকুল হাসান ওরফে লিটন এবং এস এম আহমেদুল হক ওরফে মনন। একটি ব্যাংকের ইন্টার ব্যাংক ক্যাশ ম্যানেজমেন্ট শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার আতিকুলকে এরই মধ্যে চাকরিচ্যুত করেছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

সূত্রটি জানায়, ২০১৯ সালে ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে খুলনা জেলা প্রশাসন থ্রি ডক্টরস কোচিং সেন্টারে অভিযান চালিয়ে ডা. তারিমকে আটক করে। ওই সময় একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে থ্রি ডক্টরস জালিয়াতির মাধ্যমে ৩০-৪০ লাখ টাকা নিয়ে অযোগ্য শিক্ষার্থীদের মেডিক্যালে ভর্তি করছে বলে উল্লেখ করে। খুলনার সিমেট্রি রোডের থ্রি ডক্টরস কোচিং সেন্টারের মালিক ডা. তারিম খুলনা মেডিক্যালের ছাত্র ছিলেন। তিনি ছাত্রলীগের খুলনা মেডিক্যাল শাখার সভাপতিও ছিলেন। প্রভাব খাটিয়ে ডাক্তারদের তাঁর হাসপাতাল ও কোচিংয়ে নেওয়া হয় বলেও অভিযোগ আছে। খুলনা শহরের রয়েল মোড়ের ফাতিমা হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ১১ জন মালিকের একজন তিনি।

গত বছর জুলাই মাসে সিআইডির অভিযানে প্রশ্ন ফাঁসচক্র ধরা পড়লে কয়েকটি কোচিং সেন্টারের সঙ্গে তাঁর থ্রি ডক্টরস নামটি উঠে এসেছে।

সূত্র জানায়, খুলনার বেশ কয়েকটি ব্যাংকের ৩৫টি হিসাবে অর্থ লেনদেন করেছেন ডা. তারিম। স্ত্রী যূথীর নামে খুলনার শামসুর রহমান রোডে ৬০ লাখ টাকা মূল্যের একটি ফ্ল্যাট, তারিমের নিজের নামে নিরালায় ৭০ লাখ টাকা মূল্যের একটি ফ্ল্যাট, বকসিপাড়ায় প্রায় এক কোটি টাকা মূল্যের দুটি ফ্ল্যাট, সোনাডাঙ্গায় প্রায় চার কোটি টাকা মূল্যের জমি, কপিলমুনিতে প্রায় এক কোটি টাকা মূল্যের বসতবাড়ি, জমি ও দোকান, খুলনা জেলখানার পেছনে এক কোটি টাকা মূল্যের জমি থাকার তথ্য মিলেছে। ডা. তারিম ও তাঁর স্ত্রীর নামে বিভিন্ন ব্যাংকে এফডিআর ও নগদ জমার পরিমাণ প্রায় এক কোটি টাকা। খুলনার তিন তারকা হোটেল ক্যাসল সালামে ৮৪ লাখ টাকার শেয়ার, একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিন কোটি টাকার শেয়ার, একটি এলিয়ন গাড়িসহ প্রায় ১৫ কোটি টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। প্রশ্ন ফাঁসের গ্রেপ্তারকৃত আসামি জাকির হোসেন দীপু, পারভেজ হোসেন এবং এস এম সানোয়ার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে থ্রি ডক্টরস কোচিংয়ের নাম বলেছেন। চক্রের হোতা জসিমের সহযোগী রওশন আলী হিমু একটি বেসরকারি টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, থ্রি ডক্টরস কোচিং সেন্টারের জন্য মোটা অঙ্কের টাকায় তার কাছ থেকে ফাঁসকৃত প্রশ্ন কিনতেন ফার্মগেটের একটি অ্যাডমিশন সেন্টারের মালিক জহিরউদ্দিন বাপ্পী।

মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা, পরিদর্শক মাধবী রানী পাল বলেন, ‘মামলার এজাহারে কয়েকটি কোচিং সেন্টারের নাম রয়েছে। থ্রি ডক্টরস কোচিং সেন্টারের পরিচালকের নাম বিভিন্নভাবে আসায় যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এরই মধ্যে তাঁর ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করা হয়েছে।’

জানতে চাইলে ডা. ইউনুসুজ্জামান খান তারিম বলেন, ‘এর আগেও আমার ব্যাপারে অভিযোগ করা হয়েছে। আমাকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ, র‌্যাব-এরপর দুদকও তদন্ত করছে। কেউ কোনো সম্পৃক্ততা পায়নি। এখন সিআইডিও পাচ্ছে না। সম্পদের ব্যাপারে জানতে চাইলে বলেন, এফডিআরের কারণে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বেশি দেখাচ্ছে। আমার সব সম্পদের ট্যাক্স পরিশোধ করা আছে। খুলনার কয়েকটি জেলার শিক্ষার্থীরা আমার প্রতিষ্ঠানে কোচিং করে, তাই ভর্তির হারও বেশি হয়। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমার নাম বারবার আসছে।’

দুই ব্যাংকারের নাম : সিআইডি সূত্র জানায়, বিভিন্ন এলাকার অর্ধশতাধিক ব্যক্তি মেডিক্যাল প্রশ্ন ফাঁসচক্রে জড়িত। জসিমের উদ্ধার হওয়া গোপন ডায়েরিতে দুই ব্যাংকার আতিকুল হাসান ও আহমেদুল হক মননের নাম পেয়েছে সিআইডি। তাঁরা প্রশ্নপত্র বিক্রি করে আসছিলেন। আতিকুলের গ্রামের বাড়ি সাভারে। তাঁর বাবা শাহাদত আলী শিক্ষক। জসিম ছিলেন তাঁর বাবার ছাত্র। আহমেদুল হক মিরপুরের ইব্রাহিমপুর এলাকায় থাকেন। একই এলাকায় থাকার সুবাদে জসিমের সঙ্গে তাঁর দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইমের সদ্য বদলি হওয়া বিশেষ পুলিশ সুপার মোস্তফা কামাল সম্প্রতি বলেন, ‘মানি লন্ডারিং মামলাটির তদন্তে ডাক্তার, ব্যাংকারসহ অনেকেরই সম্পৃক্ততা পাচ্ছি। এগুলোর অধিকতর তদন্ত চলছে।’

সূত্র-কালের কণ্ঠ

https://channelkhulna.tv/

আইন ও অপরাধ আরও সংবাদ

খুলনায় ১২ মামলার আসামি সন্ত্রাসী ‘চিংড়ি পলাশ’ যশোরে গ্রেপ্তার

নির্বাচনে নেতা-কর্মীদের অবৈধ সুবিধা দিলে পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

খুলনায় জোড়া হত্যা মামলায় ৭ জনের মৃত্যুদণ্ড

হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে তিন শিক্ষার্থীকে অনৈতিক প্রস্তাবের অভিযোগ

নৌবাহিনীর নাবিক পদে চাকুরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি, খুলনায় দুই প্রতারক গ্রেফতার

দিঘলিয়ায় তিন দিন নিখোঁজের পর শিশুর বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার, গ্রেপ্তার ১

চ্যানেল খুলনা মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন  
সম্পাদক: মো. হাসানুর রহমান তানজির
It’s An Sister Concern of Channel Khulna Media
© ২০১৮ - ২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | চ্যানেল খুলনা.বাংলা, channelkhulna.com.bd
যোগাযোগঃ ৫ কেডিএ বানিজ্যিক এলাকা, আপার যশোর রোড, খুলনা।
প্রধান কার্যালয়ঃ ৫২/১, রোড- ২১৭, খালিশপুর, খুলনা।
ফোন- 09696-408030, 01704-408030, ই-মেইল: channelkhulnatv@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য অধিদফতরে অনলাইন নিউজ পোর্টাল নিবন্ধনের জন্য আবেদিত।