বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেছেন, পরিবেশের সুরক্ষায় সামাজিক বনায়ন ও পারিবারিক পুষ্টি বাগান গড়ে তুলতে হবে। জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য নিরাপদ ও বাসযোগ্য নগরায়ন গড়ে তুলবে। এ সময় তিনি অন্তবর্তীকালীন সরকারকে পরিবেশ সুরক্ষায় সামাজিক বনায়ন গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান। শনিবার (৯ আগস্ট) খুলনা মহানগরী শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন উদ্যোগে সপ্তাহব্যাপী বৃক্ষরোপন কর্মসুচী পালন উপলক্ষে নগরীর খালিশপুর শিল্পাঞ্চলের বিআইডিসি সড়কের পাশে অবস্থিত মহানগরীর নিজস্ব কার্যালয়ে শ্রমিকদের মাঝে গাছের চারা বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ আহবান জানান।
মহানগরী সভাপতি আজিজুল ইসলাম ফারাজীর সভাপত্বিতে এবং সাধারণ সম্পাদক ডা. সাইফুজ্জামান এর পরিচালনায় উপস্থিত ছিলেন শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের খুলনা মহানগরী সহ-সভাপতি এস এম মাহফুজুর রহমান, সহ-সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম, বুলবুল কবির, দপ্তর সম্পাদক আল হাফিজ সোহাগ, দৌলতপুর থানা সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান জুনায়েদ, আমীর হোসেন তোতা, শহীদুল ইসলাম, কামরুল ইসলাম, বদরুর রশীদ মিন্টু, আসাদুল্লাহ আল গালিব, নাসির উদ্দীন, বেবি জামান প্রমুখ।
অন্তত একটি করে গাছ লাগাতে নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে মহানগরী আমীর বলেন, পরিবেশ সুরক্ষায় যা যা করণীয় শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন সবই করবে। পরিবেশ দূষণমুক্ত, দারিদ্র্য বিমোচনে ও বেকারত্ব দূরীকরণে গাছ ভূমিকা রাখে। গাছ মানুষের পরম বন্ধু। গাছ আধুনিক খুলনার প্রাণশক্তি হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারে। তাই প্রতিটি নাগরিকের নৈতিক দায়িত্ব অন্তত একটি করে গাছ লাগানো। তিনি বলেন, পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে এবং নগরবাসীকে নিরাপদ বাতাসের ছায়াতলে রাখার লক্ষ্যে শ্রমিকদের প্রাণপ্রিয় সংগঠন শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন প্রতি বছর বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় এ বছরও সপ্তাহব্যাপী বৃক্ষরোপণ ও বিতরণ কর্মসূচি পালনের উদ্যোগ নিয়েছে।
মহানগরী আমীর আরও বলেন, বৃক্ষ শুধু পরিবেশ রক্ষা করে না, এটি মানুষের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। পরিবেশ বিপর্যয়ের বিরুদ্ধে গাছই হতে পারে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। আমরা রাজনীতির বাইরেও সমাজ ও পরিবেশের কল্যাণে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে চাই। বৃক্ষরোপণের এই উদ্যোগ আমাদের তরুণদের সচেতন ও দায়িত্ববান নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলবে।
তিনি বলেন, আজ আমরা শুধু চারা বিতরণ করিনি, আমরা ভবিষ্যতের জন্য একটি আশার বীজ বপন করেছি। প্রতিটি এলাকায় এ কর্মসূচি বিস্তৃতি করার পরিকল্পনা রয়েছে। এই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির লক্ষ্য ছিল স্থানীয় জনগণকে পরিবেশ বিষয়ে সচেতন করা, বাড়ির আঙিনায় কিংবা রাস্তার ধারে গাছ লাগানোর প্রতি উদ্বুদ্ধ করা এবং ফলজ গাছ রোপণের মাধ্যমে খাদ্য ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা বাড়ানো।
সভাপতির বক্তব্যে আজিজুল ইসলাম ফারাজী বলেন, দেশীয় ফল আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। এদেশে রঙে, রসে ও স্বাদে অনন্য সত্তরের বেশি প্রজাতির দেশীয় ফল পাওয়া যায়। পুষ্টি ও স্বাস্থ্য রক্ষায় দেশীয় ফলের বিকল্প নেই। তিনি আরও বলেন, ফরমালিনযুক্ত বিদেশি ফলের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে দেশীয় ফলের মাধ্যমে। দেশীয় ফল ভিটামিন, খনিজ, ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সরবরাহ করে যা মানবদেহের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শারীরিক ও মানসিক বিকাশে দেশীয় ফল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তিনি দেশীয় ফলের মধ্যে পেয়ারা, পেঁপে, লেবু, আমলকি, আম, কাঁঠাল, কলা, জাম, লিচু, জামরুল, বেল, কদবেল, জাম্বুরা প্রভৃতির ব্যাপক চাষাবাদের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, এসব ফল চাষের মাধ্যমে আমরা পরিবেশ সুরক্ষা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারব ইনশাআল্লাহ্।