একসময় প্রেমে প্রতারণা মানেই ছিল গোপনে দেখা-সাক্ষাৎ, বার্তা লুকানো বা সন্দেহজনক ফোনকল। তবে প্রযুক্তির এই যুগে প্রতারণার ধরন পাল্টে গেছে। অনেকেই প্রেমে পড়ছেন বা যৌন বার্তা পাঠাচ্ছেন এআই চ্যাটবটের সঙ্গে। নতুন এক গবেষণা বলছে, এটুকুই যথেষ্ট একটি সম্পর্ক ভেঙে দেওয়ার জন্য।
ডেটিং অ্যাডভাইস ডটকম এবং কিনসে ইনস্টিটিউট পরিচালিত এক জাতীয় গবেষণায় দেখা গেছে, ৬১ শতাংশ সিঙ্গেল ব্যক্তি মনে করেন, এআইয়ের সঙ্গে প্রেমে জড়ানো বা যৌন বার্তা বিনিময় করা সম্পূর্ণরূপে প্রতারণা। এটা কেউ ‘আধা-প্রতারণা’ বা ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে মানছেন না—তাঁরা একে স্পষ্টভাবেই প্রতারণা হিসেবে দেখছেন।
গবেষণার প্রধান গবেষক ড. অ্যামান্ডা গেসেলম্যান বলেন, মানুষ স্বীকার করছে যে এই প্রযুক্তি ঘনিষ্ঠতা ও মানসিক সহায়তা দিতে পারে। এআই এখন আর অবমাননাকর বা নিম্নমানের কিছু নয়। বরং অনেকের কাছেই এটি এতটাই বাস্তব অনুভূত হয় যে, তা একটি সম্পর্কের জন্য হুমকির পর্যায়ে পৌঁছেছে।
গবেষণা বলছে, প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ মনে করে, এআইয়ের সঙ্গে যৌন বার্তা বিনিময় করাও প্রতারণা। আর ২৯ শতাংশ মনে করে, শুধু প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলাই যথেষ্ট প্রতারণার প্রমাণ। তুলনামূলকভাবে ৭২ শতাংশ বলেছে, অন্য কোনো মানুষের সঙ্গে যৌন বার্তা চালাচালি হলে তা সম্পর্ক ভাঙার জন্য যথেষ্ট।
প্রযুক্তির আগেও মানুষ পরকীয়ার বিষয়ে সন্দিহান ছিল। জরিপে অংশ নেওয়া প্রায় অর্ধেক মানুষ বলেছে, তারা কোনো না কোনো সময় সঙ্গীর প্রতি অবিশ্বাস পোষণ করেছে। এর মধ্যে ৮৫ শতাংশ কিছু না কিছু পদক্ষেপও নিয়েছে—কখনো মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ, কখনো ফোন তল্লাশি। কেউ কেউ আবার গোপনে লোকেশন ট্র্যাক করেছে বা লুকানো ক্যামেরা ব্যবহার করেছে।
প্রযুক্তি কেবল সম্পর্ককে সহজ বা কঠিন করে তুলছে না, এটি সম্পর্কের ধারণাকেই বদলে দিচ্ছে। এখন একটি চ্যাটবট থেকে পাওয়া মানসিক সমর্থন, কোড দিয়ে লেখা যৌন বার্তা এবং প্রেমের আলাপ—এগুলো এখন স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়াচ্ছে।