
ভারতের মোবাইল ফোনের খুচরা বিক্রেতা ও দোকানগুলোকে কঠোর সতর্কবার্তা দিয়েছেন অ্যাপলের ডিস্ট্রিবিউটররা। নতুন বিক্রি হওয়া আইফোন, বিশেষ করে আইফোন ১৭ সিরিজ কেনার ৯০ দিনের মধ্যে বিদেশি সিম কার্ড দিয়ে সক্রিয় করা হলে দোকানগুলোর ওপর বড় ধরনের জরিমানা আরোপ করা হবে।
ডিস্ট্রিবিউটরদের পাঠানো বার্তায় বলা হয়েছে, ‘আপনার আউটলেট থেকে বিক্রি হওয়া কোনো ডিভাইস যদি ৯০ দিনের মধ্যে বিদেশি সিম দিয়ে সক্রিয় বা ব্যবহার করতে দেখা যায়, তাহলে আপনার আউটলেটের ওপর বড় অঙ্কের জরিমানা আরোপ করা হবে এবং নীতিমালা অনুযায়ী স্টোর-কোড ব্লক করে দেওয়া হতে পারে।’
মানি কন্ট্রোলের প্রতিবেদনে বলা হয়, এমন অভিযান শুরু হওয়ার কারণ হলো—ভারতের বাজার থেকে আইফোন ১৭ মডেল কার্যত গায়েব। বিপুল পরিমাণ ডিভাইস রাশিয়া, আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের মতো বেশি মুনাফার বাজারে পাচার হয়ে যাচ্ছে।
শিল্প খাত—সংশ্লিষ্টদের হিসাবে, মোট আইফোন রপ্তানির ৩ থেকে ৫ শতাংশ আসে অননুমোদিত (গ্রে মার্কেট) চালান থেকে; যার প্রায় অর্ধেকই যাচ্ছে রাশিয়ায়—যেখানে ইউক্রেন যুদ্ধের পর অ্যাপল কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়।
গত অক্টোবর মাসে ভারতের আইফোন রপ্তানির পরিমাণ পৌঁছায় ১ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারে, যা সে সময়ের মোট স্মার্টফোন রপ্তানির প্রায় এক-তৃতীয়াংশ।
এই গ্রে মার্কেট রপ্তানির কারণে বিশেষ করে আইফোন ১৭-এর ২৫৬ জিবি ও ৫১২ জিবি ভ্যারিয়েন্টের তীব্র ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
সরবরাহ-সংকটের কথা বলে অ্যাপল ২২ নভেম্বর থেকে ব্যাংক ক্যাশব্যাক অফারও কমিয়ে দিয়েছে। আইফোন ১৭ সিরিজে আগে যেখানে ছয় হাজার রুপির ক্যাশব্যাক ছিল, এখন তা নেমে এসেছে মাত্র এক হাজার রুপিতে।
ভারতে আইফোন ১৭-এর দাম ৮২ হাজার ৯০০ রুপি হলেও রপ্তানি বাজারে এর দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৮ হাজার ৫০০ রুপি। অনেক সময় রপ্তানি-প্যাকেজে চার থেকে পাঁচ হাজার রুপির আনুষঙ্গিক পণ্যও দেওয়া হচ্ছে।
খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, এই নির্দেশনা অন্যায্য। কারণ, এটি মূলত ছোট দোকানগুলোকে টার্গেট করছে, অথচ বড় দোকান বা ডিস্ট্রিবিউটররা এর আওতার বাইরে থাকছে।
মানি কন্ট্রোলকে এক বিক্রেতা বলেন, প্যারালাল এক্সপোর্ট শুধু মেইনলাইন খুচরা বিক্রেতাদের সমস্যা নয়; এতে অনলাইনসহ সব চ্যানেলই জড়িত।
অল ইন্ডিয়া মোবাইল রিটেইলার্স অ্যাসোসিয়েশনের কৈলাশ লাখিয়ানি বলেন, প্রতি মাসে লাখ লাখ ফোন রপ্তানি হচ্ছে, যার ফলে দেশীয় ক্রেতাদের জন্য নির্ধারিত আর্থিক সুবিধাগুলো অন্যত্র চলে যাচ্ছে।
কোম্পানির সাম্প্রতিক ‘আয়ের কল’-এ অ্যাপলের সিইও টিম কুকও সরবরাহ-সংকটের কথা স্বীকার করেন।
তিনি বলেন, আইফোন ১৬ ও ১৭-এর বেশ কিছু মডেলের ক্ষেত্রে উচ্চ চাহিদার কারণে ঘাটতি তৈরি হয়েছে।
সূত্রমতে, ডিসেম্বর নাগাদ সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে।


