
জাহানারা আলমের সাক্ষাৎকার প্রকাশ হওয়ার পরই টালমাটাল ক্রিকেট। কদিন আগে তাঁর প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের সাবেক নির্বাচক ও টিম ম্যানেজার মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু ও এবং বিসিবির নারী বিভাগের প্রয়াত সাবেক ইনচার্জ তৌহিদুর রহমানের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের মতো স্পর্শকাতর অভিযোগ এসেছে। সামাজিক মাধ্যমেও তাইজুল ইসলাম, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিমরাও প্রতিবাদ জানিয়েছেন এই ঘটনায়।
জাহানারা ইস্যুতে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তাইজুলের আশা বিসিবি এ ধরনের ঘটনায় যথাযোগ্য ব্যবস্থা নেবে। একই সঙ্গে তাঁর চাওয়া দেশের প্রত্যেক নাগরিক নিরাপদে থাকুক। বাংলাদেশের বাঁহাতি স্পিনার নিজের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে আজ লিখেছেন,‘বোন জাহানারা আলমের সাক্ষাৎকার দেখে স্তব্ধ ও মর্মাহত। কোনো নারী বা ব্যক্তির সঙ্গে এমন ঘটনা কখনোই কাম্য নয়। এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানাচ্ছি। আমার বিশ্বাস দ্রুত তদন্ত শেষে, সেই প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিবে বিসিবি। যা অনুকরণীয় হয়ে থাকবে। নিরাপদে থাকুক বাংলাদেশের প্রতিটি মা, বোন ও মানুষ।’
জাহানারা আলমের ঘটনায় তামিম-মুশফিক ফেসবুকে গতকাল পোস্ট করেছেন। হেনস্তার শিকার সব নারী ক্রিকেটারকে মুখ খোলার আহ্বান জানিয়ে তামিম লিখেছেন, ‘জাহানারা আলম যে অভিযোগগুলো তুলেছেন, সবগুলোই গুরুতর এবং সেসব সত্যি হলে তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়ার মতো নয়। শুধু একজন জাতীয় ক্রিকেটার বা সাবেক অধিনায়ক বলেই নয়, যেকোনো পর্যায়ের ক্রিকেটার হোক বা যেকোনো খেলার ক্রীড়াবিদ কিংবা যেকোনো নারী—কারও প্রতি এমন আচরণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’ মুশফিক জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করেছেন। আর পরশু রাতে আজকের পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জাহানারা আলমের বিস্ফোরক অভিযোগসহ বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটের করুণ চিত্র তুলে ধরলেন রুমানা আহমেদ। রুমানা বলেছেন, ‘জাহানারা মুখ খুলেছে, জুনিয়ররা অ্যাবিউজ হলে কি মুখ খুলতে পারবে।’
‘তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশের পর প্রকৃত সত্য সবার সামনে আসবে আশা করছি। সে সময় পর্যন্ত অনুমাননির্ভর কোনো তথ্য প্রকাশ না করার জন্য সবার কাছে বিনীত অনুরোধ করছি। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশের পর আমি সবার সঙ্গে কথা বলবো।’
বাংলাদেশের হয়ে ৫২ ওয়ানডে ও ৮৩ টি-টোয়েন্টি খেলা জাহানারা সবশেষ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছেন গত বছর ডিসেম্বরে। এর পর থেকে ৩২ বছর বয়সী পেসার আছেন অস্ট্রেলিয়ায়। জাহানারার বিস্ফোরক অভিযোগ ভাবমূর্তি সংকটে বিসিবি, বিশেষ করে, নারী ক্রিকেটে। এ ধরনের অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত না হলে দেশের নারী ক্রিকেটের বড় ক্ষতি হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।


