যশোরের মনিরামপুরের সম্মিলনী ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক হাফিজুর রহমান নিজের বিচারের দাবিতে ব্যানার ঝুলিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে কলেজের ফটকে এ কর্মসূচি পালন করেন তিনি।
খবর পেয়ে আধা ঘণ্টা পর কলেজের অধ্যক্ষ ড. শফিকুল ইসলাম ওই শিক্ষকের কর্মসূচি ভাঙিয়ে তাঁকে অফিসকক্ষে নিয়ে যান। হাফিজুর রহমান ওই প্রতিষ্ঠানের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক।
হাফিজুর রহমানের অভিযোগ, তাঁর দুই সহকর্মী রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের রুহুল কুদ্দুস টিটো ও ভূগোল বিভাগের আব্দুস সালাম কলেজের শিক্ষকদের ফেসবুক মেসেঞ্জার গ্রুপে তাঁকে নিয়ে নানা আপত্তিকর কথা লিখেছেন, যা তাঁকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করেছে। তিনি কথাগুলোর ভার নিতে না পেরে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন। পরে নিজের বিচারের দাবিতে তিনি কলেজের ফটকে অবস্থান কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেন।
হাফিজুর রহমান বলেন, ‘কলেজে নিয়মিত কমিটি গঠনের উদ্দেশ্যে শিক্ষক প্রতিনিধি (টিআর) নির্বাচন নিয়ে গত বৃহস্পতিবার আলোচনা হয়েছে। ওই কমিটিতে তিনজন টিআর নির্বাচিত হবেন। আমি একজন প্রার্থী। বর্তমান অ্যাডহক কমিটির টিআর রুহুল কুদ্দুস টিটো ও শিক্ষক আব্দুস সালামসহ আমরা পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অধিকাংশ শিক্ষক আমাকে ভোট দিতে চেয়েছেন। এতে ঈর্ষান্বিত হয়ে টিটো ও আব্দুস সালাম আমার সম্পর্কে কলেজের মেসেঞ্জার গ্রুপে উল্টোপাল্টা লিখেছেন।’
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের এই শিক্ষক আরও বলেন, ‘ওই দুই শিক্ষকের ভাষায় আমি খারাপ মানুষ। আমি মনে করি, আমি খারাপ হলে আমার বিচার হওয়া উচিত। এ জন্য আমি নিজের বিচার দাবি করে কলেজের সামনে ব্যানার ঝুলিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলাম। পরে অধ্যক্ষ স্যার এসে আমাকে অনুরোধ করে অফিসে নিয়ে যান। আমার অভিযোগ লিখিত আকারে জানাতে বলেছেন। তিনি একটা সমাধান দেবেন। আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি। এ জন্য লিখিত দেওয়ার ব্যাপারে তাঁকে এখনো সিদ্ধান্ত জানাইনি।’
সহকারী অধ্যাপক হাফিজুর রহমানকে নিয়ে আপত্তিকর কথা বলার অভিযোগের বিষয়ে দুই শিক্ষকের মধ্যে রুহুল কুদ্দুস টিটোর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, ‘হাফিজুর রহমান নিজে থেকে কলেজে নানা দায়িত্বে আসতে চান। গতকাল সোমবার কলেজে নবীনবরণ অনুষ্ঠান হয়েছে। তাঁকে দায়িত্ব না দেওয়ায় চটেছেন। এ ছাড়া টিআর নির্বাচনে তাঁকে ভোট না দিলে কয়েকজন শিক্ষককে দেখে নেবেন বলে হুমকি দিয়েছেন।’
রুহুল কুদ্দুস টিটো আরও বলেন, ‘আমাদের কলেজের ১০-১২ জন শিক্ষকের একটি মেসেঞ্জার গ্রুপ আছে। ভোট চাওয়া নিয়ে কয়েকজন শিক্ষককে হুমকি দেওয়ার বিষয়ে জানতে পেরে গ্রুপে আমি লিখেছিলাম, “হাফিজুর ভাই, আপনার চেহারা দিন দিন সুন্দর হচ্ছে; কিন্তু আচরণ ভালো করা দরকার।” এর বাইরে তাঁকে নিয়ে খারাপ কোনো মন্তব্য আমরা কোনো শিক্ষক করিনি।’
সম্মিলনী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষক হাফিজুর রহমানের অবস্থান কর্মসূচির বিষয়ে জানতে পেরে আমি নিজে তাঁকে অফিসে ডেকে এনে আলোচনায় বসেছিলাম। তিনি দুজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে খারাপ মন্তব্যের অভিযোগ তুলে উপযুক্ত বিচার দাবি করেছেন। আমি প্রমাণাদিসহ তাঁকে লিখিত অভিযোগ করতে বলেছি।’