সব কিছু
facebook channelkhulna.tv
খুলনা মঙ্গলবার , ১০ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২৪শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
ডুমুরিয়ায় ড্রাগন ফল চাষ করে বেকার যুবকদের কোটিপতি হওয়ার ব্যাপক সুযোগ তৈরি হয়েছে | চ্যানেল খুলনা

ডুমুরিয়ায় ড্রাগন ফল চাষ করে বেকার যুবকদের কোটিপতি হওয়ার ব্যাপক সুযোগ তৈরি হয়েছে

শেখ মাহতাব হোসেন :: বিদেশী সুস্বাদু ও জনপ্রিয় ড্রাগন ফল এখন চাষ হচ্ছে খুলনার ডুমুরিয়ায়। স্বল্প সময়ে অল্প পুঁজিতে ড্রাগন ফল চাষ করে বেকার যুবকদের কোটিপতি হওয়ার ব্যাপক সুযোগ তৈরি হয়েছে বলেও দাবি করেছেন স্থানীয় কৃষি অফিস।
ভিয়েতনামের জাতীয় ফল ড্রাগন। মিষ্টি ও টক-মিষ্টি স্বাদের ড্রাগনে স্বাস্থ্য উপকারিতা এবং প্রসাধনী গুণ থাকায় দিনদিন বাংলাদেশে এর চাহিদা বাড়ছে। বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ হচ্ছে দেশে। আবহাওয়ার অনুকুল পরিবেশে থাকায় খুলনা জেলায় বাণিজ্যিকভাবে ব্যাপকভাবে চাষাবাদ শুরু হয়েছে বিদেশি ক্যাকটাস প্রজাতীয় এ ফলের।
খুলনা শহর থেকে খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়ক ধরে প্রায় ১৭ কিলোমিটার গেলেই ডুমুরিয়া উপজেলা। উপজেলা সদর থেকে ৬
কিলোমিটার পথ গিয়ে সাহস ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামে খালের পাড়ে গেলেই চোখ পড়ে কৃষি উদ্যোক্তা  মোঃ রফিকুল ইসলাম শেখের ড্রাগন বাগান। দূর থেকে দেখলে মনে হয় স্ব-যত্নে ক্যাকটাসের আবাদ করেছেন তিনি। একটু পাশে যেতেই চোখ ধাঁধিয়ে নয়নাভিরাম লাল ফলের সারিতে। প্রতিটি গাছে রয়েছে ফুল, মুকুল ও ড্রগন ফল।
২০১৯ সালে মাত্র ১০টি কাটিং (চারা) দিয়ে মোঃ রফিকুল ইসলাম শেখ এ বাগানের সূচনা করেন। গত ৪বছরে যেখানে শোভা পেয়েছে ৪৯ টি গাছ। প্রতি সপ্তাহে ২/৩ মণ ফলের পাশাপাশি তিনি প্রতিদিন বিক্রি করছেন গাছের কাটিং বা চারা। বাজারে পাইকারী প্রতি কেজি ড্রাগন বিক্রি হচ্ছে ৩শ টাকায়। আর প্রতিটি চারা বিক্রি হচ্ছে ৫০টাকা দরে।
সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তা জানান, তার এ চারা দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী দেশেও রফতানি হচ্ছে।
খুলনা কৃষি অফিস সূত্র জানা যায়, এ দেশের আবহাওয়া লাল, হলুদ এবং সাদা ড্রাগন ফল চাষের জন্য বেশ উপযোগী। এটি লতানো কাটাযুক্ত গাছ, যদিও এর কোনো পাতা নেই। গাছ দেখতে অনেকটা সবুজ ক্যাকটাসের মতো। ড্রাগন গাছে শুধুমাত্র রাতে স্বপরাগায়িত ফুল ফোটে। ফুল লম্বাটে সাদা ও হলুদ রঙয়ের হয়। তবে মাছি, মৌমাছি ও পোকা-মাকড় পরাগায়ন ত্বরান্বিত করে। কৃত্রিম পরাগায়নও করা যায়। এ গাছকে ওপরের দিকে ধরে রাখার জন্য সিমেন্টের/বাঁশের খুঁটির সঙ্গে ওপরের দিকে তুলে দেয়া হয়।
ড্রাগনের চারা বা কাটিং রোপণের ১০থেকে ১৫ মাসের মধ্যেই ফল সংগ্রহ করা যায়। এপ্রিল-মে মাসে ফুল আসে আর শেষ হয় নভেম্বর মাসে। ফুল আসার ৩০থেকে ৪০দিনের মধ্যে ফল সংগ্রহ করা যায়। নভেম্বর মাস পর্যন্ত ফুল ফোটা এবং ফল ধরা অব্যাহত থাকে। এক একটি ফলের ওজন ২৫০গ্রাম থেকে দেড় কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। একটি পূর্ণাঙ্গ গাছ থেকে ১শ’ থেকে ১৩০টি পর্যন্ত ফল পাওয়া যায়। সঠিক পরিচর্যা করতে পারলে একটি গাছ হতে ৪০ বছর বয়স পর্যন্ত ফলন পাওয়া সম্ভব বলেও জানায় কৃষি অফিস।
ড্রাগন চাষি মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাত্র ১০টি চারা দিয়ে ড্রাগনর আবাদ শুরু করেন তিনি। গত বছর মাত্র ৪ শতাংশ জমিতে বিক্রি হয়েছিল দুই লাখ টাকা। আর এ বছর ৫১শতাংশ জমিতে ড্রাগনের চাষাবাদ করেছেন। ড্রাগন চাষে নিজেকে সফল বলে দাবি করেন তিনি। এ বছর ৫ লাখ টাকার ফল বিক্রি হবে বলে তিনি আশা করেন। খুলনা জেলায় ফলন ভাল হলেও, এ ফলের জনপ্রিয়তা এখনো তেমন বাড়েনি। মানুষের মধ্যে প্রচারণাও কম। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এবং বিদেশে রফতানি করা সম্ভব হলে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব। প্রতিদিন এলাকার অনেক কৌতুহলী মানুষ আসেন তার বাগান দেখতে। অনেকেই উদ্বুদ্ধ হয়ে চারা কিনছেন, চাষাবাদও করছেন।

এছাড়া উপজেলার নকাটি গ্রামের শামছের মোল্লার ছেলে হাফেজ মোঃ আবুল খায়ের মোল্লা তিনি ৫৭শতক জমিতে ৩লক্ষ টাকা খরচ করে ৮লক্ষ টাকা বিক্রয়ের আশা করেন।
এ ব্যাপারে  ডুমুরিয়া উপজেলার‌ কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মোঃ ওয়ালিদ হোসেন বলেন, ড্রাগন ফল উচ্চ মূল্যের ফসল এবং অত্যন্ত ঔষধিগুণ সম্পন্ন। এটিতে একটানা ৮মাস ফল পাওয়া যায় এবং বাজারেও চাহিদা রয়েছে। এজন্য কৃষকদের আমরা প্রদর্শনী, প্রশিক্ষণ প্রদান করার পাশাপাশি মাঠে গিয়ে পরামর্শ দিচ্ছি। আগামীতে এর উৎপাদন আরও অনেক বৃদ্ধি পাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ ইনসাদ ইবনে আমিন বলেন, ড্রাগন ফল বিদেশি ফল হলেও দেশের আবহাওয়া এবং মাটি এটি চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। ডুমুরিয়াতে বাউ-১, বাউ-২ জাতের ড্রাগনের চাষ হচ্ছে। ড্রাগন গাছে একটানা ৭/৮মাস ফল পাওয়া যায়। এর বাজার মূল্য বেশি এবং অধিক পুষ্টি সমৃদ্ধ হওয়ায় এটি সম্প্রসারণের কাজ করছি।ব্লু- গোল্ড প্রকল্পের মাধ্যমে এটি ডুমুরিয়াতে প্রথম বারের মতো চাষ শুরু হয়েছে। এটি অনেক লাভজনক হওয়ায় এটির আবাদ দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং তরুণ উদ্যোক্তারা এটির প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন। উপকূলীয় এলাকায় এর সফলতার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।
খুলনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শেখ হাফিজুর রহমান বলেন, জেলায় অনেকেই ড্রাগন ফলের চাষ করছে। বিদেশি এ ফসল দেশের মাটিতে চাষ বৃদ্ধির লক্ষ্যে খুলনা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছেন। অধিক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন এ ফল চোখকে সুস্থ রাখে, শরীরের চর্বি কমায়, রক্তের কোলেস্টেরল কমায়, উচ্চ রক্তচাপ কমানোসহ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। স্থানীয় বাজার সৃষ্টির মাধ্যমে এ ফল চাষে কৃষকেরা লাভবান হচ্ছে।

https://channelkhulna.tv/

কৃষি ভাবনা আরও সংবাদ

আ.লীগ নেতা সাইফুলের অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধান শুরু দুদকের

তরুণদের প্রযুক্তিতে আগ্রহী হওয়ার আহ্বান ডা. জোবাইদার

ডুমুরিয়ায় তিলের ভালো ফলন: চাষি মুখে হাসি

ডুমুরিয়ায় বিষমুক্ত সবজি চাষে কৃষকেরা দেখছেন সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ

ডুমুরিয়া উপজেলায় বোরো ধান কাটার ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা

ফকিরহাটে বানিজ্যিকভাবে ব্রি ধান-১০২ চাষে সফলতা পেয়েছে কৃষক

চ্যানেল খুলনা মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন  
DMCA.com Protection Status
সম্পাদক: মো. হাসানুর রহমান তানজির
It’s An Sister Concern of Channel Khulna Media
© ২০১৮ - ২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | চ্যানেল খুলনা.বাংলা, channelkhulna.com.bd
যোগাযোগঃ ৫ কেডিএ বানিজ্যিক এলাকা, আপার যশোর রোড, খুলনা।
প্রধান কার্যালয়ঃ ৫২/১, রোড- ২১৭, খালিশপুর, খুলনা।
ফোন- 09696-408030, 01704-408030, ই-মেইল: channelkhulnatv@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য অধিদফতরে অনলাইন নিউজ পোর্টাল নিবন্ধনের জন্য আবেদিত।