ভারতের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী জুবিন গর্গ মারা গেছেন। সিঙ্গাপুরে অবস্থানকালে স্কুবা ডাইভিং করতে গিয়ে গুরুতর আহত হন তিনি। দ্রুত সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে নেয়া হলেও শেষ পর্যন্ত বাঁচানো যায়নি তাকে। তার মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধোঁয়াশায় তদন্তের কথা জানিয়েছে আসাম সরকার।
ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, জুবিনের লাশ উদ্ধারের পর শেষ হয়েছে ময়নাতদন্ত। শনিবারই নয়াদিল্লিতে গায়কের দেহ পৌঁছোনোর কথা।
সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠান করতে গিয়েছিলেন জুবিন। অনুষ্ঠানের আয়োজকদের বিরুদ্ধে একাধিক এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। অসম সরকারের পক্ষ থেকে গায়কের মৃত্যুর তদন্তভার নেওয়া হয়েছে। ‘নর্থইস্ট ইন্ডিয়া ফেস্টিভ্যাল’ নামের যে অনুষ্ঠানে জুবিন যোগ দিতে সিঙ্গাপুরে গিয়েছিলেন, তার আয়োজক শ্যামকানু মহন্তের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে মারিগাঁও থানায়। জুবিনকে সহায়তাকারী সিদ্ধার্থ শর্মার বিরুদ্ধেও অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
অসম সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জুবিন গার্গের মৃত্যুর তদন্তে শ্যামকানু ও সিদ্ধার্থকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে অসম পুলিশ। এ ছাড়াও শেষ মুহূর্তে যারা গায়কের সঙ্গে ছিলেন তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
সমাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অসম পুলিশকে অনুরোধ করেছেন এফআইআর সংক্রান্ত সমস্ত নথি যেন তারা ‘সেন্ট্রাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট’-এর হাতে তুলে দেয়।
প্রসঙ্গত, ১৯৭২ সালের ১৮ নভেম্বর মেঘালয়ের তুরায় জন্মগ্রহণ করেন জুবিন। শৈশব থেকেই সংগীতমুখর পরিবেশে বড় হন তিনি। কেবল আঞ্চলিক গায়ক নন, জুবিন গর্গ সংগীতের ভুবনে নিজেকে আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। অসমিয়া, বাংলা, হিন্দি, নেপালি, তামিল, তেলেগু, মালায়ালাম, মারাঠি, ওড়িয়া, ইংরেজি ছাড়াও কার্বি, মিসিং, তিওয়ার মতো আদিবাসী ভাষাসহ ৪০টিরও বেশি ভাষা ও উপভাষায় গান গেয়েছেন তিনি।
শুধু কণ্ঠ নয়, বাদ্যযন্ত্র বাজানোতেও ছিল তার দারুণ দক্ষতা। তবলা, গিটার, ড্রাম, হারমোনিয়াম, দোতারা, ঢোল, ম্যান্ডোলিনসহ অন্তত ১২ ধরনের বাদ্যযন্ত্র বাজাতে পারতেন তিনি। বহুমুখী প্রতিভার কারণে জুবিন অসমের সর্বাধিক সম্মানিত ও সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া শিল্পীদের একজন হয়ে উঠেছিলেন।
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ‘পিয়া রে’, ‘আয়না মন ভাঙা আয়না’, ‘চোখের জলে ভাসিয়ে দিলাম’, ‘মন মানে না’, বলিউডের ‘ইয়া আলি’সহ অসংখ্য জনপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন তিনি। সূত্র: আনন্দবাজার।