জলবায়ু পরিবর্তন বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রা, খাদ্য নিরাপত্তা, অপুষ্টি, আয়কে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছে। যা দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলের মানুষের বেকারত্ব সৃষ্টি করেছে। গবেষণা ভিত্তিক উন্নয়ন সংস্থা লিডার্স, গবেষণা এবং তথ্য প্রচারের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রশমনের চেষ্টা করে যাচ্ছে। উপকূলীয় এলাকার স্থানীয় সমস্যা নিয়ে গবেষণা পরিচালনার জন্য গবেষকদের বৃত্তি প্রদান যার মধ্যে অন্যতম।
এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার (৩০ জুন) লিডার্স এর ক্লাইমেট এ্যান্ড এডাপটেশন নলেজ ম্যানেজমেন্ট সেন্টার গবেষকদের বৃত্তি প্রদান করেছে। লিডার্স এর খুলনা আঞ্চলিক অফিসে আয়োজিত বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহকারি অধ্যাপক অন্তরা বিশ্বাস, লিডার্সের প্রকল্প সমন্বয়ক মোসা. লায়লা খাতুন এবং জ্ঞান ও গবেষণা ব্যবস্থাপক তুষার সরকার। তারা উপকূলীয় সমস্যাসমূহের উপর গুরুত্বারোপ করেন এবং গবেষণার প্রাসঙ্গিকতা উল্লেখ করেন।
গবেষক দলে রয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়েশা আক্তার ইতি, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মো. সেফাতুল ইসলাম ও এসকে রাকিবুল ইসলাম এবং জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজ দেবনাথ।
তারা স্থানীয় জনগণের উপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব যেমন- শ্যামনগর উপজেলায় লবণাক্ততায় প্রভাবিত কৃষি উৎপাদনে অভিযোজন কৌশলের কার্যকারিতা বিশ্লেষণ, জলবায়ুজনিত অভিবাসনের কারণ ও নীতিগত প্রতিক্রিয়া: সাতক্ষীরা জেলার প্রেক্ষিতে বিশ্লেষণ, জলবায়ু পরিবর্তন ও মানসিক স্বাস্থ্য: শ্যামনগরের উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর ওপর পরিবেশগত দুর্যোগের মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব, উপকূলীয় বাংলাদেশের আদিবাসী মুন্ডা জনগোষ্ঠীর অভিযোজন ও দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস কৌশল- এসকল বিষয়ে গবেষণা কাজ করবেন।
বিশেষ অতিথি তার বক্তব্যে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে গবেষকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনাদের গবেষণা আমাদের বাস্তবতাকে বুঝতে সহায়তা করে। তবে এ গবেষণাগুলো যদি মাঠপর্যায়ের মানুষের জীবন-জীবিকার সাথে আরও গভীরভাবে যুক্ত হয়, তাহলে তা হবে প্রকৃত অর্থে কার্যকর। স্থানীয় সমস্যার বাস্তব চিত্র, সংস্কৃতি ও অভিজ্ঞতাকে গবেষণার অংশ করে তুললে আমরা টেকসই অভিযোজন কৌশল উদ্ভাবনে এগিয়ে যেতে পারব।’ এর পাশাপাশি তিনি লিডার্স এর এই প্রশংসনীয় উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান।
গবেষক রাজ দেবনাথ তার গবেষণার বিষয়ে বলেন ‘শ্যামনগর উপজেলা, সাতক্ষীরার লবণাক্ততায় আক্রান্ত কৃষিজমিতে গৃহীত অভিযোজন কৌশলসমূহের কার্যকারিতা যাচাই’ শীর্ষক গবেষণাটি স্থানীয়ভাবে বাস্তবায়িত অভিযোজন পদ্ধতিগুলোর ফলপ্রসূতা বিশ্লেষণ করবে। এই গবেষণার মাধ্যমে প্রাপ্ত ফলাফল কৃষকদের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে সহায়ক হবে এবং তাদের জন্য কার্যকর ও বাস্তবসম্মত সমাধান তুলে ধরবে। পাশাপাশি, এটি নীতিনির্ধারকদের জন্য টেকসই কৃষি পরিকল্পনা গ্রহণে সহায়তা করবে। কৃষিখাতে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় গবেষণাটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
এ পর্যায়ে গবেষকগণ মত বিনিময় করেন এবং লিডার্স এর প্রশংসনীয় উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান।