বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, জামায়াতের একজন কর্মী হিসেবে আমাদের আল্লাহর কাছে দোয়া করতে হবে। তিনি যেন সবার প্রতি আমার অন্তরকে প্রশস্ত করে দেন। আমার কথা ও আহ্বানগুলো যেন সকল কঠিন হৃদয়ের মানুষের কর্ণকুহরেও পৌঁছিয়ে দেন। দ্বীন ইসলাম বিরোধী একজন মানুষের দুঃখ ও কষ্টে আনন্দিত হওয়ার কিছু নেই। আল্লাহ তায়ালা মুমিন হিসেবে আমাকে যে মানবিক চরিত্র দিয়েছেন তা দিয়ে মানুষকে মূল্যায়ন করতে হবে। মানবতার প্রতি আমাদের মনের দুয়ার খোলা রাখতে হবে। তিনি বলেন, আল্লাহর দ্বীনকে জমিনে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য আল্লাহর রাসূল (সা.) যুদ্ধে গেছেন এবং যুদ্ধ করেছেন। আমরাও এ জমিনে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠিত করার জন্য আল্লাহর রাসূলের দেখানো পথ মত অনুযায়ী যুদ্ধ করে যাবো। সমাজ থেকে অন্যায়- অবিচার উৎখাত করতে হলে সালাত কায়েম করতে হবে। তিনি বলেন, সকল নর-নারী আল্লাহর জমিনে আল্লাহর আইন বাস্তবায়ন করা ফরজ। জীবন চলে গেলেও আল্লাহর হুকুম এ জমিনে বাস্তবায়ন করার জন্য সকলকে কাজ করতে হবে। খুলনা মহানগরী জামায়াতে ইসলামী উদ্যোগে ১৫ জুলাই রাত সাড়ে ৯ টায় ভার্চুয়ালী অনুষ্ঠিত ঈদ পূনর্মিলনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার সদস্য ও খুলনা মহানগরীর ভারপ্রাপ্ত আমীর মাস্টার শফিকুল আলমের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান-এর পরিচালনায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন খুলনা মহানগরী সহকারী সেক্রেটারি এডভোকেট মুহাম্মদ শাহ আলম, এডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলাল ও অধ্যাপক নজিবুর রহমান। ভার্চুয়ালীযুক্ত হয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমীর মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বক্তব্য দেন।
প্রধান অতিথি সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, হজ আল্লাহ তাআলার একটি বিশেষ বিধান। হজ ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের একটি। আর্থিক ও শারীরিকভাবে সমর্থ পুরুষ ও নারীর ওপর হজ ফরজ। হজ সম্পর্কে কুরআনুল কারীমে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আল্লাহর তরফ থেকে সেই সব মানুষের জন্য হজ ফরজ করে দেওয়া হয়েছে, যারা তা আদায়ের সামর্থ্য রাখে।’
(সুরা আল ইমরান; আয়াত: ৯৭)। তিনি বলেন, হজের আভিধানিক অর্থ হলো ইচ্ছা করা ও সফর বা ভ্রমণ করা। ইসলামি পরিভাষায় হজ হলো নির্দিষ্ট সময়ে নির্ধারিত স্থানে বিশেষ কিছু কর্ম সম্পাদন করা। হজের নির্দিষ্ট সময় হলো আশহুরে হুরুম বা হারাম মাসসমূহ তথা শাওয়াল, জিলকদ ও জিলহজ; বিশেষত ৮ জিলহজ থেকে ১২ জিলহজ পর্যন্ত পাঁচ দিন। হজের নির্ধারিত স্থান হলো মক্কা শরিফে কাবা, সাফা-মারওয়া, মিনা, আরাফা, মুজদালিফা ইত্যাদি এবং মদিনা শরিফে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর রওজা শরিফ জিয়ারত করা। হজের বিশেষ আমল বা কর্মকাল হলো ইহরাম, তাওয়াফ ও সাঈ, অকুফে আরাফাহ, অকুফে মুজদালিফা, অকুফে মিনা, দম ও কোরবানি, হলক ও কছর এবং জিয়ারতে মদিনা-রওজাতুল রাসুল ইত্যাদি।
তাকবিরে তাশরিকের মূল কথা উল্লেখ করে প্রধান অতিথি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, আল্লাহর জিকির তথা তার সবচেয়ে বড়ত্ব প্রকাশ করা। তবে, বিশেষ দিনে এই আমলের জন্য বিভিন্ন শব্দ হাদিসে উল্লেখিত হয়েছে। হাদিস বিশারদদের মতে সর্বোত্তম ও সর্বজনবিদিত শব্দ হলো-আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওলিল্লাহিল হামদ। তাকবিরে তাশরিক আদায়ের পদ্ধতি হলো-৯ই জিলহজ ফজরের নামাজ হতে ১৩ ই জিলহজ আসর পর্যন্ত মোট ২৩ ওয়াক্তের ফরজ নামাজের পর কোন কথা বা সুন্নত নামাজ না পড়ে একবার করে তাকবিরে তাশরিক বলা ওয়াজিব। ঈদের দিন সাহাবায়ে কেরামের তাকবির ধ্বনিতে পুরো আশপাশ কেঁপে উঠত। আর এই তাকবির উচ্চ স্বরে বলার তাৎপর্য এটাও যে, এর দ্বারা ইসলামের তাওহিদের ঘোষণা প্রকাশ্যে উচ্চস্বরে দেওয়া হবে। তাই আসুন, তাকবিরে তাশরিকের যে বাক্যজুড়ে রয়েছে তাওহিদ, আল্লাহর বড়ত্ব ও প্রশংসার কথা; সে বাক্যে উচ্চকিত করে তুলি পৃথিবীর প্রতিটি জনপদ। প্রয়োজনে আল্লাহু আকবার ধ্বনির জন্য প্রয়োজনে আমাদেরকে জান-মাল দিতে হবে।